শনিবার, ৩১শে মে ২০২৫, ১৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • শুরু হচ্ছে নতুন স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ, কিভাবে পাবেন স্মার্ট কার্ড?
  • নোয়াখালীতে ঘরে ঢুকে নারীকে জবাই করে হত্যা, লাশ পুকুরে
  • ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে কানাডা, ম্যানিটোবায় জরুরি অবস্থা জারি
  • আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য হার্ভার্ডের বিকল্প গন্তব্য
  • ভারতের দাসত্ব করবে না বাংলাদেশ, প্রয়োজন হলে জীবন দেবো
  • জেনে নিন মাথায় নতুন চুল গজানোর দুর্দান্ত উপায়
  • ইশরাকের শপথ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন
  • দুর্ভোগ চরমে মাত্র তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছেন ২৬ হাজার গ্রাহক
  • নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সাগর, বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
  • এটিএম আজহারের খালাস উদযাপন করায় এনসিপিকে বর্জনের ঘোষণা

ছোট গল্প

যেখানে কোন প্যারা নেই

আবদুল মোমেন

প্রকাশিত:
৮ আগষ্ট ২০২৩, ১১:৩৯

মুকসুদপুর বাস স্টেশনে নেমে রিকশায় উঠলাম। রিকশায় চড়ে দুই তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর কটিয়াদি গ্রামে পৌঁছলাম। জনবহুল গ্রামটি পেছনে ফেলে হাটা শুরু করলাম। 
 
মনে অনেক দুশ্চিন্তা! অস্থিরতা ও হতাশা জেঁকে   বসেছে। মা, বাবা, বউ আর দুই সন্তান নিয়ে সংসার। আমার যা আয় তা দিয়ে পুরো মাস চলেনা। মাস শেষে দেনা হয়ে যায় মেলা টাকা। সেই দেনার দায় মিটাতে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর কয়েকটি মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে মাসিক কিস্তিতে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেটে চলছি আর দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ভাবছি। 
 
এতো দায় দেনা কি করে মিটাবো। মা বাবার আবদার, বউ বাচ্চার নানা চাহিদা কি করে পূরণ করবো। চরম দুশ্চিন্তার ভেতর হাটতে হাটতে হঠাৎ সংজ্ঞা ফিরলো। তখন নিজেকে গ্রাম থেকে অনেক দূরে আবিষ্কার করলাম। 
 
চারদিকে খোলা মাঠ। মাঠে ফসলি জমি। 
ফসল ফলে নানা জাতের, সারা বছর। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। 
 
মাঠের মাঝখানে এঁকেবেঁকে  চলে গেছে মেঠোপথ। 
পথের দু ধারে মেহগনি গাছের সারি, মাঝে মাঝে ঝোপঝাড়। বাতাসে গাছের মগডাল নড়ছে। রোদের আলোতে গাছের ছায়া খেলছে। খোলা মাঠে বাতাসের শনশন শব্দ সুর তুলেছে । 
 
পথে হাঁটতে হাঁটতে  চোখে পড়ল নারিকেল গাছে  ঘেরা বড় একটি পুকুর। পুকুরের সামনের পাড়ে আম গাছের ছায়ায় কাঠের তক্তার বৈঠকখানা। আহ! কি সুন্দর স্নিগ্ধ পরিবেশ! মনোমুগ্ধকর  হিমেল হাওয়ায় হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে। 
 
মেঠোপথ ধরে আরো খানিকটা এগোলে  অপূর্ব সুন্দর ছোট্ট  একটি কাচা ঘর। ঘরটি কাচা হলেও সব কিছু পরিপাটি। সামনে বারান্দা। বড় উঠান। উত্তর-দক্ষিণে জানালা। জোছনার আলো রাতে অনায়াসে ভিতরে প্রবেশ করে। দক্ষিণা হাওয়া নির্বিঘ্নে ঘরের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করে।
 
এরকম একটা বাড়িতে আমরা বসবাস করছি। মাঠের নানা জাতের ফসলে আমাদের রোজগার। সে রোজগারের অর্থ খরচ করে বছর খুলিয়ে আরো জমা থাকে। কোন টেনশন নেই। নেই কোন প্যারা। আমার মা, বাবা বিকেলে নাতিদের নিয়ে উঠানে খেলছে। বউ পুকুর থেকে তুলে আনা তাজা মাছ রান্না করছে। অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশে চলছে আমার সুখের সংসার। 
 
হটাৎ ঘরের দরজায় প্রচণ্ড শব্দে বউ ডাকছে। উঠো উঠো। কিস্তির টাকার জন্য লোক এসেছে। উঠো…। বউয়ের চেঁচামেচিতে আমার ঘুম ভাঙলো।
 
লেখা: আবদুল মোমেন
তারিখ : ০৭/০৮/২৩

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর