প্রকাশিত:
১৪ জুন ২০২৫, ১৮:১৫
আধুনিক পিতারা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দায়িত্বশীল। তাঁরা শুধু আয়-রোজগারই করেন না, বরং সন্তানের দেখভাল, ঘরের নানা কাজ, আবেগগত উপস্থিতি এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনাতেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এত কিছু সামলানো সত্ত্বেও অনেক বাবা তাঁদের ক্লান্তি বা মানসিক চাপ নিয়ে প্রকাশ্যে খুব কমই কথা বলেন।
সমাজ এখনো পুরুষদের “সব কিছু চুপচাপ সহ্য করা” মানসিকতায় অভ্যস্ত দেখতে চায়। এই চাপকে ‘অদৃশ্য মানসিক বোঝা’ বলা হয়—যার মধ্যে পড়ে বিল পরিশোধ করা, স্কুলের মিটিং মনে রাখা, ঘরের ভাঙা-চোরা মেরামত, কিংবা বড় পরিকল্পনার মধ্যে পরিবারের ভবিষ্যৎ, খরচ বৃদ্ধি, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগাড় ইত্যাদি।
এই প্রসঙ্গে সন্তুষ্টি হেলথকেয়ার-এর কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট সালোনি চাওলা ও প্রধান ডায়েটিশিয়ান ও প্রতিষ্ঠাতা লাভলীন কৌর বাবাদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য পাঁচটি সহজ ও কার্যকর উপায় HT লাইফস্টাইলকে জানিয়েছেন:
১. চাপ স্বীকার করুন।
প্রথম ধাপ হলো নিজের মানসিক অবস্থা স্বীকার করা। ক্লান্ত, চিন্তিত বা বিষণ্ণ বোধ করা একেবারেই স্বাভাবিক। যখন আপনি মানবেন যে আপনি চাপের মধ্যে আছেন, তখন আপনি তা পরিচালনা করার জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজে নিতে পারবেন।
২. সঙ্গীর সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নিন।
ঘরের ভেতর খোলামেলা কথা বলুন—স্কুল মিটিং হোক বা ঘরের সমস্যা, সবকিছু ভাগাভাগি করুন। শুধু কাজ নয়, বরং কাজের পরিকল্পনাটাও ভাগ করুন, যাতে একজনের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে। এতে সম্পর্কেও পারস্পরিক বোঝাপড়া দৃঢ় হয়।
৩. অপরাধবোধ ছাড়াই নিজের যত্ন নিন।
নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকির অপেক্ষা করবেন না। প্রতিদিন অল্প হাঁটা, নিজের পছন্দের শখের চর্চা বা কিছুটা শান্ত সময় কাটানো মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনি সুস্থ থাকলে পরিবারকেও ভালো রাখতে পারবেন।
৪. অন্য বাবাদের সঙ্গে কথা বলুন।
আপনি একা নন। পার্কে, স্কুলে বা অনলাইনে অন্য বাবাদের সঙ্গে আলাপ করুন। অভিজ্ঞতা বিনিময় করলে আপনি বুঝবেন, অনেকেই আপনার মতো অনুভব করেন। এটি একধরনের মানসিক সহায়তা দেয়।
৫. প্রয়োজনে পেশাদার সহায়তা নিন।
চাপ যদি খুব বেশি মনে হয়, তাহলে কাউন্সেলর বা থেরাপিস্টের সাহায্য নেওয়া বিচক্ষণতা। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া দুর্বলতা নয়, বরং এটি একটি সাহসী ও জ্ঞানী পদক্ষেপ—নিজের ও পরিবারের সুস্থ জীবনের জন্য।
আপনার সবকিছু একা টানার দরকার নেই। একজন ভালো বাবা মানে এমন কেউ নন, যিনি কখনো ক্লান্ত হন না—বরং তিনি এমন একজন, যিনি নিজের বাস্তব অবস্থা স্বীকার করেন, দায়িত্ব ভাগ করে নেন এবং সবার পাশে থাকেন।
মন্তব্য করুন: