শুক্রবার, ১৩ই জুন ২০২৫, ৩০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • জেনেটিক্যালি আমরা ইমোশনাল ফ্যামিলি
  • আত্ম-আবিষ্কারের সংগ্রাম
  • প্রস্তুত আমেরিকা, বিশ্বকাপের ক্ষণগণনা শুরু
  • বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে
  • যেভাবে টিকে গেল নেতানিয়াহুর জোট সরকার
  • কেন্দুয়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক ৩
  • সিলেট সীমান্ত দিয়ে মোট ৫৮২ জনকে পুশইন
  • জাম পেড়ে দেওয়ার প্রলোভনে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা
  • আজ শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের ১০ সদস্য
  • মামলা বাতিল করার নিয়ম কী?

যেভাবে টিকে গেল নেতানিয়াহুর জোট সরকার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২৫, ১৬:৫৯

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী জোট সরকার বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট ভাঙার বিরোধীদলীয় একটি প্রস্তাব থেকে রক্ষা পেয়েছে। এই প্রস্তাব পাস হলে আগাম নির্বাচনের পথ খুলে যেত।

জোট সরকারে থাকা ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল চায়, অতি-গোঁড়া বা কট্টরপন্থী ধর্মীয় ইহুদি সেমিনারি শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। তবে নেসেটের অনেক সদস্য এই ছাড় বাতিলের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।

ইসরায়েলে বহুদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অতি-গোঁড়া ইহুদি শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি।

কনেসেটের (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) ১২০ জন সদস্যের মধ্যে ৬১ জন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন, আর ৫৩ জন ভোট দেন পক্ষে। বিরোধীরা এই বিল উত্থাপন করেছিল একটি উদ্দেশ্যে—নেতানিয়াহুর প্রতি ক্ষুব্ধ আল্ট্রা-অর্থোডক্স (কট্টরপন্থী ধর্মীয়) দলগুলোর সমর্থনে সরকার ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচন নিশ্চিত করা।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে গঠিত নেতানিয়াহুর বর্তমান জোট সরকারকে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে ডানপন্থী সরকারগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এতে শাস এবং ইউনাইটেড টোরা জুডাইয়াম নামের দুটি অতি গোঁড়া ইহুদি দল রয়েছে। বাধ্যতামূলক সামরিক সেবার বিষয় নিয়ে এই দল দুটি আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব সমর্থনের হুমকি দিয়েছিল।
ইসরায়েলে সামরিক সেবা বাধ্যতামূলক হলেও, স্বাধীনতার সময়কালে গৃহীত একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যারা পূর্ণকালীন ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে, বিশেষ করে ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নে নিযুক্ত, তাদের জন্য এক ধরনের অব্যাহতি কার্যকর রয়েছে। তবে এই ছাড় থাকা উচিত কি না, তা বহুদিন ধরেই বিতর্কের বিষয়।

গাজা যুদ্ধ চলাকালে (যা প্রায় ২০ মাস ধরে চলছে) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত জনবল প্রয়োজন হওয়ায় এই বিতর্ক আরো তীব্রতর হয়েছে।

নেতানিয়াহু তার লিকুদ পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে রয়েছেন আল্ট্রা-অর্থোডক্স যুবকদের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা ও যারা দায়িত্ব এড়িয়ে যায় তাদের জন্য শাস্তির বিধান করার জন্য। কিন্তু শাসের মতো দল এই ধরনের যেকোনো আইনকে তাদের রেড লাইন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং তারা স্থায়ী অব্যাহতির আইনি নিশ্চয়তা দাবি করছে।

বৃহস্পতিবারের ভোটের আগেই ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছিল, নেতানিয়াহুর জোটের কর্মকর্তারা আল্ট্রা-অর্থোডক্স নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন সমঝোতা খুঁজে পেতে। এই আলোচনার জন্য সময় বের করতে নেতানিয়াহুর দল কনেসেটের এজেন্ডা নানা বিল দিয়ে পূর্ণ করে দেয়, যাতে ভাঙন বিলের ভোটে বিলম্ব হয়।

চরম-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বুধবার পার্লামেন্টে বলেন, ‘যুদ্ধ চলাকালীন সরকার পতন ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইতিহাস ক্ষমা করবে না যদি কেউ রাষ্ট্রকে এই সময়ে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেয়। আল্ট্রা-অর্থোডক্সদের সামরিক বাহিনীতে অংশগ্রহণ জাতীয় ও নিরাপত্তাজনিত প্রয়োজন।’

নেতানিয়াহুর সরকার গঠিত হয়েছে লিকুদ, চরম-ডানপন্থী দল ও আল্ট্রা-অর্থোডক্স ইহুদি দলগুলোর জোটে। এই দলগুলোর সমর্থন প্রত্যাহার মানেই সরকারের পতন। এখন আপাতত সেই পতন ঠেকানো গেলেও, ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে বিরোধ আরো বাড়লে ভবিষ্যতে নেতানিয়াহুর সরকার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

যদিও বিরোধী জোট মূলত মধ্যপন্থী ও বামঘেঁষা দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত, তথাপি সরকারকে সমর্থন দেওয়া ধর্মীয় দলগুলো এর আগে হুমকি দিয়েছিল তারা এই প্রস্তাব সমর্থন করতে পারে। তাদের ক্ষোভের কেন্দ্রে রয়েছে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবায় ইহুদি অতি-গোঁড়া যুবকদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি। তবে বৃহস্পতিবার সকালে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ অতি-গোঁড়া আইনপ্রণেতা প্রস্তাবটি সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার ফলে বিরোধীরা ছয় মাসের মধ্যে আরেকটি অনুরূপ বিল আনতে পারবে না।

বুধবার বিরোধী নেতারা বলেছিলেন, পার্লামেন্টে বিল তোলার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে নেওয়া হয়েছে এবং তা সব বিরোধী দলের জন্য বাধ্যতামূলক। তারা আরো জানান, সরকার পতনের লক্ষ্যে সব আইন প্রণয়নের কাজ আপাতত বন্ধ রাখবে বিরোধী দলগুলো।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর