বৃহঃস্পতিবার, ১২ই জুন ২০২৫, ২৯শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • জেনেটিক্যালি আমরা ইমোশনাল ফ্যামিলি
  • আত্ম-আবিষ্কারের সংগ্রাম
  • প্রস্তুত আমেরিকা, বিশ্বকাপের ক্ষণগণনা শুরু
  • বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে
  • যেভাবে টিকে গেল নেতানিয়াহুর জোট সরকার
  • কেন্দুয়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক ৩
  • সিলেট সীমান্ত দিয়ে মোট ৫৮২ জনকে পুশইন
  • জাম পেড়ে দেওয়ার প্রলোভনে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা
  • আজ শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের ১০ সদস্য
  • মামলা বাতিল করার নিয়ম কী?

অস্ট্রিয়ায় স্কুলে গুলির ঘটনায় নিহত বেড়ে ১১, কে ছিলেন বন্দুকধারী?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১১ জুন ২০২৫, ১২:১৮

অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গ্রাজের একটি হাইস্কুলে মঙ্গলবার সকালে এক বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। প্রথমে নিহতের সংখ্যা ১০ বলা হয়েছিল, তবে নিহতদের মধ্যে হামলাকারী নিজেও রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শহরের মেয়র ও পুলিশ।

এ ঘটনা শান্তিপূর্ণ ও মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ায় যুদ্ধের বাইরের সবচেয়ে প্রাণঘাতী গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হামলাটি ঘটে গ্রাজ শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, যা দক্ষিণাঞ্চলীয় স্টাইরিয়া প্রদেশের রাজধানী।

স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে গুলির শব্দ শুনে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। গ্রাজ শহরটি ভিয়েনা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এবং শহরটিতে রয়েছে বহু বিশ্ববিদ্যালয়।
গ্রাজের মেয়র এলকে কাহর জানান, নিহত ১১ জনের মধ্যে সাতজন শিক্ষার্থী ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন। পুলিশ জানায়, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন।

বন্দুকধারী কে ছিলেন?

অস্ট্রিয়ান সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, হামলাকারী ২১ বছর বয়সী একজন সাবেক ছাত্র। তিনি একসময় ওই স্কুলেই পড়তেন।

স্থানীয় এক পত্রিকা জানায়, তিনি অতীতে সহপাঠীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তবে সেই ক্ষোভ থেকেই এই হমলা চালানো হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

তিনি পিস্তল ও শটগান ব্যবহার করে দুটি শ্রেণিকক্ষে গুলি চালান, যার একটি ছিল তার পুরনো ক্লাসরুম। এরপর তাকে স্কুলের এক বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, হামলাকারী একজনই ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ক্রিশ্চিয়ান স্টকার একে ‘জাতীয় ট্র্যাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি আমাদের জাতিকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।

’রাষ্ট্রপতি আলেক্সান্ডার ভ্যান ডার বেলেন বলেন, ‘এই তরুণদের সামনে ছিল পুরো জীবন। একজন শিক্ষক যিনি তাদের পথপ্রদর্শক ছিলেন—এই ক্ষত কখনোই পূরণ হবে না।’ সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

পুলিশ জানায়, স্কুলটি সম্পূর্ণরূপে খালি করে সবাইকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও সহায়তায় একটি পুলিশ হেলিকপ্টারও মোতায়েন করা হয়েছে। অভিভাবকদের জন্য একটি স্থান নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। হামলার পরপরই স্কুলের বাইরে অ্যাম্বুলেন্স ও সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুর স্কুলে নিরাপদে থাকার অধিকার রয়েছে।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইন লেখেন, ‘স্কুল মানেই ভবিষ্যতের প্রতীক। এমন জায়গায় মৃত্যু ও সহিংসতা দুঃসহ।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘স্কুল কখনো সহিংসতার স্থান হতে পারে না।’

অস্ট্রিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্রের প্রচলন কেমন?

স্মল আর্মস সারভে অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জনে প্রায় ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে—ইউরোপের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। মেশিনগান ও পাম্প-অ্যাকশন গান নিষিদ্ধ, তবে পিস্তল ও রিভলভার ব্যবহারে অনুমোদন প্রয়োজন। শিকার বা শুটিং ক্লাবের সদস্যদের জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া সম্ভব।

গ্রাজবাসীরা বলছেন, ‘এটা তো আমেরিকায় ঘটে। আমরা কখনো ভাবিনি যে এমন কিছু আমাদের শহরে হতে পারে।’ অস্ট্রিয়ার শান্তিপূর্ণ ভাবমূর্তির বিপরীতে এমন ঘটনা দেশটিকে এক গভীর শোক ও অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড় করিয়েছে।

অস্ট্রিয়ায় আগেও কি এমন হামলা হয়েছে?

হ্যাঁ, তবে বিরল। ১৯৮১ সালে এক হামলায় ২ জন নিহত হন। ২০১৩ সালে এক হরিণ শিকারি তিন পুলিশ ও এক অ্যাম্বুলেন্স কর্মীকে হত্যা করে। ২০২০ সালে ভিয়েনায় আইএসপন্থী এক বন্দুকধারী চারজনকে হত্যা ও ২৩ জনকে আহত করেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর