প্রকাশিত:
১০ জুন ২০২৫, ১৬:৪১
পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে মালদ্বীপের বিশেষ সুনাম রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা সেখানে ঘুরতে যান, বাদ নেই ভারতের পর্যটকও। তবে গেল বছরে নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর মালদ্বীপের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল ভারত! এরপর পর্যটক হারানোর ভয়ে ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে ‘নর্দমা’ বলে কটূক্তি করে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার একাংশ এবং ভারতবিরোধী কথা বলা শুরু করে মালদ্বীপ। ঠিক সে সময়েই নেট দুনিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ে চলে আসে ‘বয়কট মালদ্বীপ’।
তবে নড়বড়ে অর্থনৈতিক কাঠামোর জেরে সেই ‘বিদ্বেষ’ খুব বেশি দিন টেকেনি। বিরোধিতার সুর গত বছরই মিত্রতায় বদলে গেছে। এবার পর্যটক টানতে বিশ্বমঞ্চে সেই ভারতীয় তারকামুখের দ্বারস্থই হতে হলো মালদ্বীপকে। দেশটির নতুন পর্যটন দূত (গ্লোবাল ট্যুরিজম অ্যাম্বাসাডর) হিসেবে ঘোষণা করা হলো ক্যাটরিনা কাইফকে।
এক বিবৃতি জারি করে ক্যাটরিনা কাইফ জানিয়েছেন, মালদ্বীপের সৌন্দর্য এবং বিলাসবহুল পর্যটনশিল্পের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে আমি উচ্ছ্বসিত। মালদ্বীপ এমন একটি জায়গা, যেখানে সৌন্দর্য আর শান্তির অপরূপ সহাবস্থান রয়েছে। ‘সানি সাইড অব লাইফ’-এর মুখ হিসেবে নির্বাচিত হতে পেরে আমি সম্মানিত। বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের কাছে এখানকার আকর্ষণীয় লোকেশন এবং ভ্রমণ অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে উদগ্রীব হয়ে রয়েছি।
চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকতে থাকা মালদ্বীপকে গত বছরই ৩০০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছে ভারত। সেই সময় থেকেই মুইজ্জুর সুর নরম হয়েছে। গত বছর অক্টোবর মাসে ভারত সফরেও এসেছেন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট। বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন মুইজ্জু। সে সময়েই মোদিকে মালদ্বীপ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, আগামী মাসে জুলাইতে মোদি যাচ্ছেন সেদেশে। ঠিক তার প্রাক্কালেই বলিউড তারকা ক্যাটরিনা কাইফকে বিশ্বমঞ্চে মালদ্বীপের পর্যটন দূত হিসেবে ঘোষণাকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশিষ্টমহল। অভিনেত্রী অবশ্য মালদ্বীপের পর্যটন দূত হতে পেরে ভীষণই উচ্ছ্বসিত। কী মন্তব্য ক্যাটরিনার?
প্রসঙ্গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর থেকে তাল কাটে দিল্লি-মালের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের। সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদিকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন যুব, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী মালশা শরীফ এবং মরিয়ম শিউনা-সহ আর এক মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ। গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’। এই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়তে থাকে মালদ্বীপের ওপরে। এর পরই ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাতে তৎপর হন মুইজ্জু। এবার বলিউড অভিনেত্রীকে পর্যটন দূত হিসেবে ঘোষণা করলেন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট।
মন্তব্য করুন: