বৃহঃস্পতিবার, ৫ই জুন ২০২৫, ২২শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • মাদ্রাসা নিয়ে বিশাল সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
  • যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য
  • সান্ডা কিনলে পান্ডা ফ্রি
  • তরুণ সূর্যসদৃশ নক্ষত্রের চারপাশে প্রথমবার পানির অস্তিত্ব আবিষ্কার
  • আমরা এমন কর্মসূচি দেব, আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না
  • ট্রাম্পের শুল্কে ছারখার বিশ্ব অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির পতনে হুঁশিয়ারি
  • ভারতীয় সেনা ও মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা মুখোমুখি
  • ২০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মাত্র ১% সন্তানদের দিচ্ছেন বিল গেটস
  • সৌর ঝড় কী এবং কেন হয়
  • গ্রেটার জাহাজ কি গাজা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে

তরুণ সূর্যসদৃশ নক্ষত্রের চারপাশে প্রথমবার পানির অস্তিত্ব আবিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২৫, ১৬:৩৬

সূর্যসদৃশ এক তরুণ নক্ষত্রের চারপাশে পানির অস্তিত্ব নিশ্চিত করলেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (JHU) নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো প্রমাণ মিলেছে যে, গ্রহ গঠনের প্রাথমিক ধাপে থাকা একটি নক্ষত্রব্যবস্থায় বরফের উপস্থিতি রয়েছে।

এই আবিষ্কারের মাধ্যমে বহু পুরোনো এক তত্ত্বের পক্ষে দৃঢ় প্রমাণ মিলল—যে ধারণা অনুসারে সৌরজগতের প্রাথমিক কালে বাইরের অঞ্চল থেকে ধূমকেতু ও গ্রহাণুর মাধ্যমে পৃথিবীতে পানি এসেছে, বিশেষ করে ৪ বিলিয়ন বছর আগে ‘লেট হেভি বোম্বার্ডমেন্ট’ নামে পরিচিত সময়কালে।

নতুন আবিষ্কৃত পানি পাওয়া গেছে HD 181327 নামের একটি নক্ষত্রের চারপাশের ধ্বংসাবশেষ-পূর্ণ ডিস্কে, যা পৃথিবী থেকে ১৫৫ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। মাত্র ২.৩ কোটি বছর বয়সী এই নক্ষত্র এখনও প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্কে ঘেরা, যার মানে হলো, সেখানে এখনো গ্রহ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

NASA-র এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান গবেষক ও জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহকারী চেন শি বলেন,

“ওয়েব টেলিস্কোপ কেবল বরফ নয়, বরফের স্ফটিক আকৃতিও স্পষ্টভাবে শনাক্ত করেছে—যা আমরা শনির বলয় কিংবা কুইপার বেল্টে দেখতে পাই। এই বরফ গ্রহ গঠনে সহায়তা করে এবং ভবিষ্যতে সেখানকার কঠিন ভূমিতে পৌঁছে দিতে পারে।”

গবেষকরা এই পর্যবেক্ষণ করেন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের নিয়ার-ইনফ্রারেড স্পেকট্রোগ্রাফ (NIRSpec) ব্যবহার করে, যা তরুণ নক্ষত্রটির বাইরের ধ্বংসাবশেষ ডিস্কে পানির রাসায়নিক চিহ্নগুলো স্পষ্টভাবে শনাক্ত করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই সিস্টেমের মোট বরফের ২০ শতাংশেরও বেশি অংশ রয়েছে বাইরের ধ্বংসাবশেষ বেল্টে, যা কুইপার বেল্টের মতোই—বরফ এবং সূক্ষ্ম ধূলিকণার সংমিশ্রণে তৈরি ‘ডার্টি স্নো বল’ বা নোংরা তুষারগোলকের মতো। কেন্দ্রীয় নক্ষত্রের কাছাকাছি গেলে বরফের পরিমাণ কমতে থাকে, যেখানে মাঝামাঝি অঞ্চলে বরফের পরিমাণ মাত্র ৮ শতাংশ এবং কেন্দ্রে প্রায় নেই বললেই চলে। এর কারণ হতে পারে নক্ষত্রের অতিবেগুনি রশ্মি, যা বরফকে বাষ্পে রূপান্তর করে দেয়।

এই আবিষ্কার নিশ্চিত করেছে সেই অনুমান, যা NASA-র Spitzer Space Telescope ২০০৮ সালে দিয়েছিল। এবার তারই প্রমাণ মিলল ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে।

গবেষণার সহ-লেখক এবং স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টিন চেন বলেন, “২৫ বছর আগে আমার উপদেষ্টা বলেছিলেন ধ্বংসাবশেষ ডিস্কে বরফ থাকতে পারে, কিন্তু তখন আমাদের হাতে এত সংবেদনশীল যন্ত্র ছিল না। এখন দেখা যাচ্ছে, এটি অনেকটা আমাদের সৌরজগতের কুইপার বেল্ট পর্যবেক্ষণের মতোই।”

ওয়েব টেলিস্কোপ আরও একটি বিষয় নিশ্চিত করেছে—এই তরুণ নক্ষত্র ও তার ধ্বংসাবশেষ ডিস্কের মধ্যে রয়েছে একটি পরিষ্কার, ধূলিমুক্ত ফাঁকা এলাকা। এই ধ্বংসাবশেষ বেল্টের বাইরে এখনও সংঘর্ষ চলছে, যেমনটা দেখা যায় কুইপার বেল্টেও।

চেন বলেন, “HD 181327 একটি অত্যন্ত সক্রিয় ব্যবস্থা। সেখানে নিয়মিত সংঘর্ষ ঘটে, আর সেসব সংঘর্ষে উৎপন্ন বরফধূলি ওয়েব টেলিস্কোপ সহজেই শনাক্ত করতে পারে।”

এই গবেষণা ভবিষ্যতের গ্রহ গঠন নিয়ে ধারণা স্পষ্ট করতে সাহায্য করবে এবং জানাবে আমাদের সৌরজগত কীভাবে গঠিত হয়েছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর