প্রকাশিত:
২৬ মে ২০২৫, ১৪:২৭
প্রায় তিন দশকের সংগীতজীবনে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন লাখো শ্রোতার কাছে। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্যারিয়ারে যেমন পরিপক্বতা এসেছে, তেমনি অনেকের মনে প্রশ্ন,আঁখি আলমগীরের বয়স কি তবে থেমে গেছে? সম্প্রতি খুলনায় এক অনুষ্ঠানে এসে সে প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন দেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর।
আঁখি বলেন, “মানুষ যাকে ভালোবাসে, তার সব কিছুই ভালো লাগে। আর যাকে অপছন্দ করে, তার ভালো দিকটাও চোখে পড়ে না। আমার মনে হয়, আপনারা আমাকে একটু বেশিই ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসার কারণে আমার বয়স যে বাড়ছে, সেটা হয়তো আপনাদের চোখে ধরা পড়ে না। অথবা আপনারা যে দোকান থেকে চশমা নেন, তারা আপনাদের সঠিক পাওয়ারের চশমা দেয় না! তাই ঠিক করে দেখতে পান না। আসলে বয়স বাড়ছেই, তবে ভালোবাসা যেহেতু রয়ে গেছে অটুট, তাই আমিও চিরসবুজ হয়ে আছি।”
সিনেমার গানে কম দেখা যায় কেন?
বর্তমানে চলচ্চিত্রের গানে কম দেখা যায় আঁখি আলমগীরকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর একজন শিল্পীর পক্ষ থেকে দেওয়া কঠিন। এখন খুব বেশি সিনেমা তো হয় না, তার মধ্যে যে ক’টি হয়, তাও নির্দিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কানেক্টেড শিল্পীদের দিয়েই কাজ করানো হয়। এতে দোষের কিছু নেই। যেমন আজ আমাকে এখানে এনেছে ইশরাত। যাকে তার ভালো লাগে, তাকেই নিয়ে এসেছে। তাই যারা যাদের সঙ্গে কানেক্টেড, তারাই সুযোগ পায়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি আজ পর্যন্ত কাউকে ফোন করে কাজ চাইনি। ৩০ বছর আগে করিনি, এখনো করবো না। আমার ব্যস্ততাও কমেনি, বরং মনে হয় আরও বেড়েছে। কারণ গানের বাইরেও এখন অনেক কিছু এক্সপ্লোর করার ইচ্ছা আছে। সারাজীবন গানের পেছনেই সময় দিয়ে ফেলেছি। এখন নিজের জন্য একটু সময় চাই,ঘুরতে চাই, দেখতে চাই। তাই গানে কিছুটা বিরতি আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এখন আমার অনেক পাখনা মেলে উড়ার সময়।”
আঁখি আলমগীর খুলনার সঙ্গে নিজের গভীর এক আবেগঘন সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “একবার রূপসা ব্রিজ এলাকায় একটি টেলিকম কোম্পানির প্রোগ্রামে এসেছিলাম। টানা সাত-আটদিন প্রচারণা চলার পর এত দর্শক জমে গিয়েছিল যে, ব্রিজের সিঁড়িগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। প্রশাসন এসে স্পন্সর বন্ধ করতে বাধ্য হয়, তারা ভেবেছিল ব্রিজটাই ভেঙে যাবে আমার কারণে! শেষ পর্যন্ত আমি মাত্র দুটি গান গেয়ে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যাই।”
তিনি জানান, “অনেকে বলেছিল, রাজশাহী, কুমিল্লা, এমনকি চট্টগ্রাম থেকেও মানুষ পোটলা গুছিয়ে আমার গান শুনতে খুলনায় এসেছিল। এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা। খুলনায় আসলেই আমি চুইঝালের মাংস খেয়ে নেই আর বাজার থেকে চুইঝাল কিনে নিয়ে যাই। খুলনা আমার কাছে শুধু একটা জায়গা না, এটা আমার আবেগের জায়গা।”
প্রিয় শ্রোতাদের ভালোবাসার ছায়ায় আঁখি আলমগীর এখনো প্রাণবন্ত। বয়সের হিসাব যাই হোক, ভক্তদের চোখে তিনি এখনো সেই চিরসবুজ, উজ্জ্বল এক সংগীততারকা। আর নিজেকে খুঁজে নিতে চাওয়া এই পরিণত বয়সে তিনি তৈরি আরও বহু নতুন অভিজ্ঞতার ডানায় ভর করে উড়তে।
মন্তব্য করুন: