প্রকাশিত:
২৬ মে ২০২৫, ১৩:০৯
এক ব্রিটিশ নারীকে শ্রীলঙ্কায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি প্রাণঘাতী এক নতুন সিন্থেটিক মাদক ‘কুশ’ চোরাচালানের অভিযোগে ৪৬ কেজি মাদকসহ ধরা পড়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি শ্রীলঙ্কার বিমানবন্দরের ইতিহাসে কুশ মাদকের সবচেয়ে বড় চালান জব্দের ঘটনা। পশ্চিম আফ্রিকায় বহুল ব্যবহৃত এই মাদকটি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, এবং অভিযোগ রয়েছে—এর উপাদানে নাকি মানব হাড়ও ব্যবহার করা হয়। জব্দকৃত মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক ১৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড।
সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট শার্লট মে লি অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, মাদকগুলো তার অজান্তেই সুটকেসে রাখা হয়েছে . তিনি ব্যাংককে অবস্থান করছিলেন এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় কাছাকাছি কোথাও ভ্রমণে শ্রীলঙ্কা যান। তার দাবি, ফ্লাইটের আগের রাতে হোটেল কক্ষে নিজেই ব্যাগ গুছিয়েছিলেন এবং মনে করছেন, তখনই কেউ মাদকগুলো সেখানে রেখে দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার এক শীর্ষ শুল্ক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকক হয়ে শ্রীলঙ্কায় মাদক চোরাচালানের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং এটি এখন “গুরুতর সমস্যা” হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘কুশ’ নামক মাদকটি তুলনামূলকভাবে নতুন একটি সিন্থেটিক নারকোটিক, যা পশ্চিম আফ্রিকায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। শুধু সিয়েরা লিওনেই এই মাদক প্রতি সপ্তাহে প্রায় এক ডজন মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাধারণত ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী পুরুষরাই এই মাদক সেবন করে। এটি গ্রহণের ফলে তারা হাঁটার সময় হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ে, অজান্তে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায় বা চলন্ত যানবাহনের সামনে চলে যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুশ তৈরিতে মানব হাড় ব্যবহার করা হয় বলে শোনা যায় এবং সিয়েরা লিওনের কবরস্থানে কঙ্কাল চুরি রোধে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ২০২৪ সালে মাদকের এই ভয়াবহ ব্যবহারের কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
সিয়েরা লিওনের রাস্তায় কুশ আসক্ত তরুণদের ফুলে যাওয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ কোণায় বসে থাকার দৃশ্য এখন সাধারণ ঘটনা।
প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাাদা বায়ো বলেন, এই মাদক একটি "অস্তিত্ব সংকট" তৈরি করছে এবং এটিকে তিনি “মৃত্যুর ফাঁদ” হিসেবে অভিহিত করেন।
মন্তব্য করুন: