প্রকাশিত:
২০ মে ২০২৫, ১৬:০৭
একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প ঘটলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, আলাস্কা এবং হাওয়াই-এ ভয়াবহ মেগা-সুনামির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদদের একটি গবেষণা প্রতিবেদন এই তথ্য জানিয়েছে। এটি গবেষণায় বলা হয়েছে, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে ৮.০ মাত্রা বা তার বেশি একটি ভূমিকম্প এই অঞ্চলে সংঘটিত হওয়ার ১৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ধরনের ভূমিকম্প ঘটলে উপকূলীয় এলাকাগুলো ৬.৫ ফুট পর্যন্ত নিচে বসে যেতে পারে, যা সুনামির ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, এই ধরণের সুনামির ঢেউ ১,০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে এবং মাইলের পর মাইল দূর পর্যন্ত প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে মিলিয়ন মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
ক্যাসকাডিয়া সাবডাকশন জোন: এক ঘুমন্ত দৈত্য
মারাত্মক এই ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলটির নাম Cascadia Subduction Zone। এটি একটি ৬০০ মাইল দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ ভূমিকম্প প্রবণ ফাটল রেখা,, যা উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত।
এখানে জুয়ান দে ফুকা প্লেট ধীরে ধীরে উত্তর আমেরিকান প্লেটের নিচে সরে যাচ্ছে। এই ভূতাত্ত্বিক কাঠামোতে যে কোনও সময় একটি ‘মেগাথ্রাস্ট’ ভূমিকম্প ঘটতে পারে, যা সমুদ্রের বিশাল অংশকে স্থানচ্যুত করে ভয়ংকর সুনামি তৈরি করতে সক্ষম।
শেষবার বড় ধরনের ভূমিকম্প এখানে হয়েছিল ১৭০০ সালে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন এই অঞ্চল এখনো চরম সক্রিয় এবং যে কোনো সময় বিশাল ভূমিকম্প ঘটতে পারে। তারা এটিকে "একটি সময় ফুরিয়ে আসা টাইম বোমা" হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কোন এলাকাগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে?
সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে:
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া
উত্তর ওরেগন
দক্ষিণ ওয়াশিংটন
এছাড়া, আলাস্কা ও হাওয়াই ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে হলেও, তাদের নিজস্ব ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি সক্রিয়তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
মেগা-সুনামি কী?
মেগা-সুনামি হলো এমন একটি সুনামি যার ঢেউ সাধারণ সুনামির তুলনায় অনেক বেশি উচ্চতা ও ধ্বংসাত্মক শক্তি সম্পন্ন। সাধারণ সুনামিতে ঢেউ কয়েক ফুট উচ্চতার হলেও, মেগা-সুনামির ঢেউ শত শত ফুট উঁচু হতে পারে। এটি সাধারণত বড় ভূমিকম্প, ভূমিধস, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা মহাজাগতিক বস্তু (যেমন উল্কা) পতনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়।
এই ধরণের সুনামি দ্রুত উপকূলে আঘাত করে, বিস্তীর্ণ এলাকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলে এবং সাধারণত পর্যাপ্ত সময় না থাকায় লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে।
মন্তব্য করুন: