প্রকাশিত:
১৭ মে ২০২৫, ১৩:২১
প্রায় ৪০ বছর পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির মর্যাদাপূর্ণ পদে লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশ। এ পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
২০২৬ সালের জুনে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নির্বাচিত হলে তৌহিদ হোসেন ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮১তম অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
তৌহিদ হোসেন নির্বাচিত হলে তিনি হবেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি, যিনি এই পদে আসীন হবেন। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, কৌশলগত প্রচারণা শুরু হয়েছে এবং তা পর্যায়ক্রমে বিস্তৃত হবে। তিনি বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভূমিকা, শান্তিরক্ষায় অংশগ্রহণ এবং প্রার্থীর অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আমরা আশাবাদী।
এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত মূলত আগের সরকারের সময় নেওয়া। ২০২০ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান এবং প্রার্থীতা উপস্থাপন করেন।
জাতিসংঘে পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপ রয়েছে এবং প্রতি বছর একেকটি অঞ্চল থেকে সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে এবার বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তৌহিদ হোসেন। বর্তমানে এই পদে আছেন ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের একজন প্রতিনিধি।
এই পদে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সাইপ্রাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব। যদিও সাইপ্রাস ইউরোপের দেশ, তবে এটি এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের অংশ হিসেবেই ধরা হয়।
বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা তৌহিদ হোসেন ১৯৮২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। তিনি প্রশাসন, প্রটোকল ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদেশে দায়িত্ব পালন করেছেন দিল্লি, কলকাতা ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তৌহিদ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন।
১৯৮০-এর দশকে যখন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এ পদে ছিলেন, তখন বছরের কয়েক মাস নিউ ইয়র্কে অবস্থান করেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এই পদ এখন ফুল-টাইম দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। এক সাবেক কূটনীতিক বলেন, বিশ্ব রাজনীতির জটিলতা ও জাতিসংঘের কার্যক্রমের বিস্তৃতির কারণে এখন প্রেসিডেন্টকে পুরো বছর নিউ ইয়র্কে থেকেই দায়িত্ব পালন করতে হয়।
তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশের প্রার্থী নির্বাচিত হলে এটি দেশের জন্য এক বিরাট কূটনৈতিক অর্জন হবে এবং জাতিসংঘে দেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।
মন্তব্য করুন: