প্রকাশিত:
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৩৩
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির বাধায় দেশটির ইয়াঙ্গুন শহর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের গত তিন মাস ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে।
তবে সীমিত পরিসরে কিছু পণ্য আসছে রাখাইনের মংডু শহর থেকে। আবার বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে পণ্য আমদানি করতে হলে আরাকান আর্মিকে ট্যাক্স দিতে হবে বলে জানান আমদানিকারকরা।
টেকনাফ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহেতাশামুল হক বাহদুর জানান, টেকনাফ স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছে। কিন্তু মায়ানমারের অভ্যন্তরে গত এক বছর আগে শুরু হওয়া আরাকান আর্মি ও দেশটির সমারিক জন্তার মধ্যে সংঘর্ষে সীমান্ত-বাণিজ্যে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে; একইভাবে সরকারও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, 'রাখাইনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেও কিছুটা পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা যেত।
মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়, আবার শুরু হয়। এভাবেই চলছে। সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারি মিয়ানমারের তিনটি পণ্যবাহী জাহাজ ইয়াঙ্গুন শহর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি রাখাইনের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্তে তাদের আটকে দেয়। এরপর থেকে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে রাখাইনের মংডু শহর থেকে সীমিত পরিসরে কাঠ আসছে। এতে কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
যদি আমরা ইয়াঙ্গুন শহরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্যবসা করতে না পারি, তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব। সেসঙ্গে সরকারও কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করার সময় দেশটির সরকারকে ট্যাক্স দিচ্ছি। কিন্তু আবার আরাকান আর্মিকে কী করে ট্যাক্স দেব। এই বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার।'
তিনি উল্লেখ করেন, ইয়াঙ্গুন শহর থেকে জাহাজ আসার সময় রাখাইনের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্ত দিয়ে আসতে হয়। তার কারণ হলো-বাংলাদেশ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদীর ঘোলার চরের কারণে জাহাজ আটকে যায়। এক্ষেত্রে সেন্টমার্টিনের বাহির থেকে ঘুরে শাহপরীর দ্বীপে জাহাজগুলো ঢুকতে পারলে আরাকান আর্মি তেমন সম্যসা করতে পারবে না।
টেকনাফ স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা সোহেল উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার কারণে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যে ধস নেমেছে। গত তিন মাসে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে।
রাখাইন শহর থেকে খুব সীমিত পরিসরে কাঠ আসছে। আর এখান থেকে রপ্তানি হচ্ছে, আলু ও পানি জাতীয় পণ্য। টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিক আলী হোসাইন বলেন, গত পাঁচ বছর বন্দরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। মিয়ানমারের রাখাইনের সংঘাতের কারণে টেকনাফ বন্দরের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কমে গেছে।
মাঝেমধ্যে কাজ করতে পারলে সংসার চলে, আর কাজ না থাকলে কষ্টে দিন যায়। টেকনাফ স্থলবন্দরের হাইওয়ে সড়কের পাশের রহমত উল্লাহ নামে এক চা-বিক্রেতা বলেন, 'বন্দরে যদি লোকজনের সমাগম না থাকে, তাহলে আমাদের আর ব্যবসা থাকে না। আগের তুলনায় এখন লোকজন কমে গেছে।'
মন্তব্য করুন: