প্রকাশিত:
৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৬
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই শুল্কনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া। অন্যান্য দেশের মতো পাকিস্তানও সেই কাতারে পড়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নেশনের খবরে বলা হয়, এখন পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত পণ্যের ওপর ২৯% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা দেশটির অর্থনীতির জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা।
যুক্তরাষ্ট্র এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার হওয়ায়, এই পরিবর্তনের ফলে বাণিজ্য কৌশলে বড় রকমের পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন হবে পাকিস্তানের।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ১.৫%, তবুও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎস। বিশেষ করে টেক্সটাইল ও সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতির মতো খাতে, যা বহুদিন ধরে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর নির্ভরশীল। এই দেশের বাজার হারানো পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরো নাজুক করে তুলবে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশ মার্কিন পণ্যে এত দিন উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে। অনেক দিন ধরেই এটা চলে আসছে, যেমন ভিয়েতনাম মার্কিন পণ্যে ৯০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে—এখন যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ঠিক তার অর্ধেক, অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ।
বাংলাদেশও মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ রেখেছে—এখন আমাদের পণ্যে তার অর্ধেক বা ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৫২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছিল, এখন তাদের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করেছে ঠিক তার অর্ধেক বা ২৬ শতাংশ।
পৃথিবীর সব দেশই যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে; কারণ তারা পরাশক্তি, এবং এই উচ্চ শুল্ক ছিল তার এক ধরনের মাশুল। এখন ট্রাম্প সেটা মানবেন না। তাই তিনি এই শুল্ক আরোপ করেছেন।
সব মিলিয়ে ট্রাম্পের এই শুল্ক ঘোষণার রেশ দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পাল্টা শুল্ক বিশ্বকে বাণিজ্যযুদ্ধের দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
তবে এটাকে পাকিস্তানের একটি জাগরণী সংকেত হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। পাকিস্তান যাতে এই ধরনের অর্থনৈতিক ধাক্কার ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য দেশটিকে জরুরি ভিত্তিতে তার বাণিজ্য সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করতে হবে, নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে হবে এবং বিকল্প অংশীদারদের সঙ্গে আরো শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
মন্তব্য করুন: