প্রকাশিত:
১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৪২
তুষারপাত। দেখতে উপভোগ্য, তবে বসবাসকারীদের জন্য চরম দুর্বিষহ। সুখী দেশ ফিনল্যান্ডের মানুষের জীবনে এই এক অসুখের নাম। সড়কে জমে থাকা তুষার শুকিয়ে ব্ল্যাক-আইসে রূপ নিলে, ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দুর্ঘটনা হয় অহরহ। দেশটিতে প্রতি বছর বরফ পিছলে অর্ধ লাখ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হন।
সাদা-শুভ্র। চোখ যতদূর যায়, ততদূর এই সফেদ জমিন। আসমানের রঙে মিতালি গড়ে ভূমিও। পুরো নগর যেন ঢাকা পড়ে তুষারের চাদরে। মাঠ-ঘাট, পথ চেনা দায়। দৃষ্টিনন্দন এই চিত্র কবি-সাহিত্যিকের লেখনিতে সরলতার উপমা তৈরি করে। দোলা দেয় মনে। চারিদিকের স্নিগ্ধতায় বয়ে যায় মায়াবী আবাহন।
প্রকৃতির এসময় উপভোগের। আইস স্কেটিং, আইস হকি খেলায় মাতেন। নানাভাবে উপভোগের চেষ্টা করেন কেউ কেউ। অনেকেই বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। গাছ-পাতা যখন মোড়ানো থাকে তুষারে, অদৃশ্য হয়ে যায় পথ। তখন মৃত্তিকার বুকে আইস স্কেটিং অদ্ভুত এক শিহরণ দেয়।
তবে, শুভ্র আর স্নিগ্ধতার এই দৃশ্যের অপর পৃষ্ঠের চিত্রটা ভিন্ন। ভয়ঙ্কর ভোগান্তির। যার নাম ব্ল্যাক আইস। অর্থাৎ, তুষারপাতের পর তাপমাত্রা কমলে রূপ নেয় বরফে। হয়ে যায় পিচ্ছিল। পাথরগুড়ো ফেলে কোনোমতে চলাচল উপযোগী করা হয়। তবে বিপত্তি বাধে ফের। তাপমাত্রা আবার বাড়লে, বরফ গলে হয়ে যায় কাদাকাদা। দুর্বিষহ হয়ে পড়ে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ফিনল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, প্রথম দিকে যখন তুষারগুলো জমে না তখন অনেকে পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আর তুষারপাত যখন জমে বরফ হয়ে যায় অর্থা ব্ল্যাক আইস হয়ে যায় তখনও মানুষ অনেক পিছলে পড়ে যায়, গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে।
ফিনল্যান্ড রোড সেইফটি কাউন্সিলের জরিপ মতে, শীত মৌসুমে প্রতি তিনজনে একজন বরফে পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হন।
বলা হয়, চীনের দুঃখ হোয়াংহো। আর সুখী দেশ ফিনল্যান্ডের দুঃখ স্নো, অর্থাৎ তুষার। যারা বেড়াতে আসেন, তাদের জন্য দারুণ এবং উপভোগের। তবে যারা স্থানীয় বাসিন্দা, তাদের জন্য বেশ অস্বস্তিকর। কারণ এই স্নো আইসে রূপান্তর হলে, চলাচলে বিঘ্নতা ঘটে।
মন্তব্য করুন: