প্রকাশিত:
১০ মার্চ ২০২৫, ১৩:০০
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করেছে ভারত। গতকাল ফাইনালে ভারত ৪ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে সর্বোচ্চ তৃতীয়বারের মতো শিরোপা গেল ভারতের ঘরে।
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করেছে ভারত। গতকাল ফাইনালে ভারত ৪ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে সর্বোচ্চ তৃতীয়বারের মতো শিরোপা গেল ভারতের ঘরে। গতকাল দুবাইয়ে রোমাঞ্চকর ফাইনালে এক ওভার হাতে রেখে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল। আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫১ রানে থামে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৫৪ রান করে ভারত। এর আগে ২০১৩ সালে এককভাবে এবং ২০০২ সালে শ্রীলংকার সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল ভারত। ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা জয় করার স্বপ্ন ছিল নিউজিল্যান্ডের সামনে। কিন্তু এবারও বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হলো দলটির। ফাইনাল ম্যাচে কিউইরা দুর্দান্ত লড়াই করলেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শিরোপা জয়ের হাসি হাসল ভারতই। ২০০০ সালে ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। আর পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল ভারত। অবসান ঘটেছে এক যুগের শিরোপা জয়ের অপেক্ষার।
ফাইনাল ম্যাচে জয়ের জন্য ভারতের সামনে ২৫২ রানের টার্গেটটা সহজই ছিল। ব্যাট করতে নেমে ভারত সূচনাটাও করে দারুণ। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা আর শুভমান গিল মিলে দলকে নিয়ে যায় শতরানের উপরে। রোহিত শর্মার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৭ ওভারেই ভারত ছুয়ে ফেলে শতরান। মাত্র ৪১ বলে ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করেন রোহিত। এটা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৮তম ফিফটি। রোহিত ও গিল ১১২ বলে দলীয় ১০৫ রান যোগ করেন। এরপর অবশ্য দ্রুত তিনটি উইকেট হারায় ভারত। ১০৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ভারত। মিচেল স্যান্টনারের বলে শর্ট এক্সট্রা কাভারে দৌড়ে গিয়ে গিলের ক্যাচ তালুবন্দি করেন গ্লেন ফিলিপস। ৫০ বলে ১ ছক্কায় ৩১ রান করে ফেরেন গিল। ব্যাট করতে নেমে ফাইনাল ম্যাচে রান পাননি বিরাট কোহলি। ১০৬ রানের মাথায় নতুন ব্যাটসম্যান কোহলিও ফিরেন সাজঘরে। মাইকেল ব্রেসওয়েলের করা ২০তম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন কোহলি। ২ বল খেলে ১ রান করে যান তিনি। দলীয় ১২২ রানে গ্ররুত্বপূর্ন একটি উইকেট হারায় ভারত। এবার রাচিন রবীন্দ্রর করা ২৭তম ওভারের প্রথম বলে স্ট্যাম্পড হন রোহিত। যাওয়ার আগে ৮৩ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৭৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে যান তিনি। ১০৫ থেকে ১২২ রানে যেতে অর্থাৎ ১৭ রানের ব্যবধানে ভারত হারায় তিন-তিনটি উইকেট। আর এতে ম্যাচ জমিয়ে তোলে নিউজিল্যান্ড। রোহিতের বিদায়ে শ্রেয়াস আয়ারের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দেন অক্ষর প্যাটেল। এই জুটির উপর নির্ভর করে ১৮৩ রানে পৌছে ভারত। দলীয় ১৮৩ রানে শ্রেয়াস আয়ারের বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আউট হওয়ার আগে ৬২ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলীয় ২০৩ রানে ভারত হারায় অক্ষর প্যাটেল এর উইকেট। মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅফে উইলিয়াম ও’রুর্কের হাতে ধরা পড়েন অক্ষর। ৪০ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রানের ইনিংস খেলে যান। লোকেল রাহুলের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। দলীয় ২৪১ রানে আউট হন হার্ডিক পান্ডিয়া। ১৮ বলে ১৮ রান করেন তিনি। পান্ডিয়া আউট হলেও জাদেজো নিয়ে দলকে জয় উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়েন রাহুল। এক ওভার বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে ২৫৪ রান করে ভারত ম্যাচ জিতে ৪ উইকেটে। রাহুল ৩৪ রানে আর জাদেজা ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এরআগে,দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে নিউজিল্যান্ড। দলের পক্ষে ড্যারিল মিচেল ও মাইকেল ব্রেসওয়েল জোড়া হাফ-সেঞ্চুরি করেন। মিচেল ৬৩ রানে আউট হলেও ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন ব্রেসওয়েল। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড শুরুটা ভালোই করে। দুই ওপেনার উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্র ৪৭ বলে ৫৭ রানের পার্টনারশীপ গড়েন। তবে ইয়ংকে ১৫ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ভারতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। ইয়াং এর বিদায়ে বেশি সময় টিকতে পারেননি অপর ওপেনার রাচিন। দু’বার জীবন পাওয়া রাচিন বোল্ড হন ৩৭ রান করে। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ বলে ৩৭ রান করে স্পিনার কুলদীপ যাদবের বলে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ৭৫ তৃতীয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে ছন্দে থাকা কেন উইলিয়ামসনকে ১১ রানে থামিয়ে নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলেন কুলদীপ। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে খেলতে থাকেন দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথাম। ৬৬ বলে এই জুটির ৩৩ রানে নিউজিল্যান্ড ১’শ রান পার করে। ৩০ বলে ১৪ রান করা ল্যাথামকে লেগ বিফোর করে জুটি ভাঙ্গেন রবীন্দ্র জাদেজা। এরপর পঞ্চম উইকেটে হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে লড়াইয়ে ফেরান গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল। দলীয় ১৬৫ রানে ফিলিপসকে শিকার করে ভারতকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন বরুণ। ফিলিপস-মিচেল জুটি ৮৭ বলে ৫৭ রান যোগ করেন। ফিলিপস ফেরার পর মাইকেল ব্রেসওয়েলকে নিয়ে দলের রান ২’শ পার করেন ৩৮ রানে জীবন পাওয়া মিচেল। দু’জনের জুটিতে ৪৭ বলে ৪৬ রান পায় দল। এসময় ৯১ বলে ওয়ানডেতে অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরির করেন মিচেল। হাফ-সেঞ্চুরির পর রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন মিচেল। কিন্তু ৪৬তম ওভারে পেসার মোহাম্মদ সামির বলে আউট হন তিনি। ৩টি চারে ১০১ বলে ৬৩ রান করেন মিচেল। দলীয় ২১১ রানে মিচেল ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা ঘুুড়িয়েছেন ব্রেসওয়েল। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে নিউজিল্যান্ডকে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫১ রানে সংগ্রহ এনে দেন ব্রেসওয়েল। ৩৯ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-২১ সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪০ বল খেলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন ব্রেসওয়েল। ভারতের
মন্তব্য করুন: