বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • শেখ হাসিনা-জয়-রেহানার ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
  • দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়তে হবে
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতি যারা ঘটাচ্ছে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না
  • ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত, ৯০ দিনে ধর্ষণের বিচার করতে হবে
  • পতিত স্বৈরাচার নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে
  • ঈদযাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রীবহন করলে কঠোর ব্যবস্থা
  • প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ
  • হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও সকল সহযোগীর বিচার হবে
  • ইসির অধীনে এনআইডি সেবা না রাখার প্রস্তাব
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন, যে জবাব দিলেন ড. ইউনূস

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন 

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের তহবিল জব্দে কাজ করছে দুদক

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত:
১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৪

যুক্তরাজ্যে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিক যে অবৈধ তহবিল তৈরি করেছেন, তা জব্দ করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই মধ্যে এ বিষয়ে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে টিউলিপ সিদ্দিকের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের বিষয়ে তদন্তের জন্য অনেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করার প্রায় এক মাস পরও বাংলাদেশে খালা শেখ হাসিনার শাসনের সঙ্গে যোগসূত্র ও সম্পদবিষয়ক প্রশ্নের মুখে পড়ছেন টিউলিপ।

যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ অল্প সময়ের জন্য সিটি মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ছিল তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির লন্ডনের সম্পত্তি ব্যবহার করা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রশ্নের পর টিউলিপ নিজেই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতাবিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লাউরি ম্যাগনাসের সেই তদন্তে জানা যায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার পাওয়া একটি ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপ অসাবধানতাবশত জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। তবে, তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

কিন্তু অব্যাহত চাপের মুখে মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাকে লেখেন, আপনার পদত্যাগ গ্রহণ করতে গিয়ে আমি স্পষ্ট করতে চাই যে, স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, মন্ত্রিত্বের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং আপনার আর্থিক অনিয়মের কোনো প্রমাণও নেই। ব্রিটেনকে পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে চলমান বিভ্রান্তি দূর করার জন্য আপনি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটি আমি উপলব্ধি করি এবং আপনার জন্য ভবিষ্যতে দরজা সবসময় খোলা রয়েছে, তা স্পষ্ট করতে চাই।

অবশ্য, শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার জের ধরে বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দুদক। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি হচ্ছে, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তি থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ। 

সূত্রমতে, টিউলিপের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের তদন্ত ১২টি দেশে বিস্তৃত করেছে দুদক। তবে, কোন কোন দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা এখনও জানায়নি সংস্থাটি। যদিও টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশ থেকে সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন বলে দাবি করেছে দুদকের একজন মুখপাত্র। 

এদিকে জানুয়ারির শেষ দিকে দুদকের তদন্তকারীদের সহায়তা করার জন্য বেশ কয়েকদিন ঢাকায় কাটিয়েছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেন, দুদক এখনো টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্ত করছে এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছে। আমরা এখনও যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশসহ বিদেশি উৎস থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করছি। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, পাচারকৃত অর্থ কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, বরং বিভিন্ন গন্তব্যে স্থানান্তরিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে পারস্পরিক আইনি সহায়তার অনুরোধ পাঠানোর চেষ্টা করছি। তাই, বিদেশি এবং অন্যান্য উৎস থেকে সহায়তা পাওয়ার পর আমাদের দল সিদ্ধান্ত নেবে যে, তারা কীভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

এ সময় দুদক মহাপরিচালক এমনও ইঙ্গিত দেন যে, যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য তারা আইনি পদক্ষেপ নেবেন অথবা কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাইবেন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে এবং তদন্ত দল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তহবিল দেশে ফেরত আনতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকের এক মুখপাত্র এ ব্যাপারে দ্য টেলিগ্রাফকে বলেছেন, এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এই বিষয়ে কেউ টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তিনি এসব দাবি নাকচ করেছেন।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর