বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • শেখ হাসিনা-জয়-রেহানার ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
  • দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়তে হবে
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতি যারা ঘটাচ্ছে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না
  • ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত, ৯০ দিনে ধর্ষণের বিচার করতে হবে
  • পতিত স্বৈরাচার নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে
  • ঈদযাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রীবহন করলে কঠোর ব্যবস্থা
  • প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ
  • হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও সকল সহযোগীর বিচার হবে
  • ইসির অধীনে এনআইডি সেবা না রাখার প্রস্তাব
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন, যে জবাব দিলেন ড. ইউনূস

অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন

একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়: প্রধান উপদেষ্টা 

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৭:০১

একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়: প্রধান উপদেষ্টাপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস | ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বরকত, সালাম, রফিক, জাব্বারের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল, তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকে নিশ্চিত করার মহাবিস্ফোরক শক্তি। অর্ধশতাব্দী পর এই মহাবিস্ফোরণ গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশকে পাল্টে দিল।

এই বিস্ফোরণ আমাদের ১৭ কোটি মানুষের সত্ত্বায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রথিত করে দিয়ে গেছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলা উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অমর একুশে বইমেলার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা এই প্রত্যয়ে শপথ নিতে এসেছি—একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়, একুশ আমাদের ঐক্যের দৃঢ় বন্ধন। এই বন্ধন ছোট-বড়, যৌক্তিক-অযৌক্তিক, ক্ষণস্থায়ী-দীর্ঘস্থায়ী সকল দূরত্বের ঊর্ধ্বে। এই জন্য সকল প্রকার জাতীয় উৎসবে, সংকটে, দুর্যোগে আমরা শহীদ মিনার ছুটে যাই। যেখানে আমরা স্বস্তি পাই, শান্তি পাই; আমরা সমাধান পাই। সাময়িকভাবে অদৃশ্য ঐক্যকে খুঁজে পাই। একুশ আমাদের মানুষকে এভাবে তৈরি করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, একুশ আমাদের পথ দেখায়। মাত্র ৬ মাস আগে জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে ঐতিহাসিক গভীরতায় ঐক্যবদ্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে আমরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং মানবিক দিক থেকে বিধ্বস্ত এই দেশকে দ্রুততম গতিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তৈরি করার প্রস্তুতি নিতে সাহস পেয়েছি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একুশের টান বয়সের ঊর্ধ্বে, প্রজন্মের ঊর্ধ্বে। একুশ প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিস্তৃত হয়েছে। শুধুই তাই নয়, এটা গভীরতর হয়েছে। আমাদেরকে দুঃসাহসী করেছে। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান তার জ্বলন্ত প্রমাণ। দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশকে ছাত্র-জনতা নতুন বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে। আমাদের তরুণ-তরুণী কিশোর-কিশোরীরা রাস্তার দেয়ালে তাদের স্বপ্নগুলো, তাদের আশঙ্কাগুলো, তাদের দাবিগুলো অবিশ্বাস্য দৃঢ়তায় এঁকে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের রাস্তার দেয়াল এখন ঐতিহাসিক দলিলে রূপান্তরে হয়ছে। এগুলোর স্থান এখন আমাদের বুকের মধ্যে এবং জাদুঘরে হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি বইমেলার উদ্যোগকে। তারা এই দেয়ালচিত্রগুলো আসা এবং যাওয়ার পথে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এই বইমেলা আমাদের জাতীয় জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। ক্রমে ক্রমে এর গুণগত এবং আয়োজনগত পরিবর্তন হয়েই থাকবে।

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, গুণগত প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্য এবং আগ্রহ বাড়ানোর জন্য প্রতিবছর বিষয়ভিত্তিক সেরা লেখক স্বীকৃতি আয়োজন করলে সেরা লেখক ও সেরা প্রকাশক হওয়ার জন্য অনেক সহায়ক হবে। আমি তাই এই প্রস্তাব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা যদি একুশের ভাষা আন্দোলনকে আরও গভীরতর প্রেক্ষিতে স্বাধিকার আন্দোলন হিসেবেও দেখি, তাহলে অমর একুশের গণ্ডি বৃহত্তর হয়ে দাঁড়ায়। তখন আমরা ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরী তরুণ-তরুণীদের তাদের সৃজনশীলতার জন্য স্বীকৃতি দিতে পারি। নতুন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য স্বীকৃতি দিতে পারি। শহর ও গ্রামের নারী পুরুষকে কৃষি, শিল্প, সাংস্কৃতিক জগত, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে যারা নির্দিষ্ট বছরে জাতির জন্য অবদান রেখেছন, তাদের স্বীকৃতি দিতে পারি। তাদের জন্য আনুষ্ঠানিক আয়োজন করে দিতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি দিতে পারি। সারা পৃথিবীজুড়ে নানা কাজে বাংলাদেশিরা কৃতিত্ব দেখাচ্ছেন। আমরা একুশের দিনে তাদের স্মরণ করতে চাই। তারা সবাই একুশের দিনে নিজের দেশকে স্মরণ করেন। সব সময় অনুষ্ঠান করে। তারা আমাদের পরিবারের অংশ হিসেবে তাদের সন্তান-সন্ততির কাছে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর