প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২০
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জাবেদ হোসেন (২৮) নামে এক মাদকাসক্ত যুবক ঘরে তার মা ওহিদা বেগমকে ঘরে বেঁধে রেখে আগুন লাগিয়ে দেয়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশি লোকজন এসে ওহিদাকে উদ্ধার করে। তবে আগুনে আসবাবপত্রসহ পুরো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরটিই ছিল বিধবা ওহিদার একমাত্র সম্বল।
মাদকের টাকা না পাওয়ায় জাবেদ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ওহিদা রায়পুর থানায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই জাবেদ পলাতক রয়েছে। এর আগে ভোর রাত ৪টার দিকে রায়পুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কেরোয়া এলাকায় হাওলাদার বাড়িতে ঘটিনাটি ঘটে।
অভিযোগ সূত্র জানায়, জাবেদ মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য তিনি তার মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া করতেন। ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করতেন। ওহিদার সংসারে ৬ মেয়ে ও একমাত্র ছেলে জাবেদ।
এতে গত ৮ বছর ধরে তার যন্ত্রণা সহ্য করে আসছে পরিবারটি। গত শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে টাকার জন্য জাবেদ তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে। একপর্যায়ে তার গায়ে থাকা জামা দিয়ে ওহিদার গলায় পেঁচিয়ে ধরে। পরে ওহিদাকে ঘরে বেঁধে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় জাবেদ। আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখে ওহিদার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে।
ওহিদার মেয়ে কামরুন নাহার বলেন, ‘আমার ভাই মাদকাসক্ত। সে ঘরে আগুন লাগিয়েছে। আমরা বিচার চাই। মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে সে। আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
তফুরা বেগম নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘রাতে ওহিদার সঙ্গে জাবেদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সে ঘরে আগুন লাগায়। হঠাৎ চারদিক আলোকিত হয়ে যাওয়ায় আমরা ছুটে এসে ওহিদাকে উদ্ধার করি।’
ওহিদা বেগম বলেন, ‘আমার শেষ সম্বল আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে জাবেদ। প্রায়ই টাকার জন্য আমাকে মারধর করতো। আমার মেয়েদের বাড়িতে আসতে দেয় না।’
রায়পুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, ‘ওহিদার ছেলেমেয়ে সবাই বিবাহিত। তার ছেলে জাবেদের সংসারে এক সন্তান রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী-সন্তান তার সঙ্গে থাকে না। ঘটনার রাতে ওহিদার কাছ থেকে তার ছেলে টাকা চেয়েছে শুনেছি। টাকা না দেওয়ায় তাকে বেঁধে রেখে জাবেদ ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনলে পার্শ্ববর্তী একটি ঘরও পুড়ে যেত।’
উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একটি ঘরে আগুন লেগেছে। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
রায়পুর থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন: