প্রকাশিত:
১০ আগষ্ট ২০২৪, ১২:০৭
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টনের পর শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রথম দিন অফিস করছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল ১১ টা ১৫ মিনিটে মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।
এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান।
এরপর শিল্প উপদেষ্টা এসেই শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
এর আগে শিল্প উপদেষ্টা আসছেন এটা জানার পর সকাল থেকেই মন্ত্রণালয়ে চলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। কক্ষের সামনে নাম ফলকে বসানো হয়েছে উপদেষ্টার নাম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপরই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা।
এরপর বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া রয়েছেন ১৬ জন উপদেষ্টা। যদিও তিনজন উপদেষ্টা এখনো শপথ নেননি। শুক্রবার (১০ আগস্ট) শপথ নেওয়া প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এই সরকারের ১৬ উপদেষ্টার একজন আদিলুর রহমান খান। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আদিলুর রহমান খান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিএনপি-জামায়াত সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। ২০০৫ সালের ডিসেম্বর তিনি একটি মামলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন যেখানে হাইকোর্ট সরকারকে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের দ্বারা বিচার বিভাগীয় বোমা হামলা থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে বলেছিলেন। তিনি ১৪ মে ২০০৭ এ তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতাকর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য আদিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় তাকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৪ ধারায় তাকে আটক করা হয়েছিল এবং তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি। ঢাকায় হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেনের মাধ্যমে কানাডা তার মুক্তির আহ্বান জানায়। বাংলাদেশের অসংখ্য মানবাধিকার কর্মী তার মুক্তির দাবি জানান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি জাফর আহমেদ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে খানকে কারাগারে ডিভিশনের মর্যাদা দিতে সরকারকে নির্দেশ দেন।
২০১৩ সালের অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বোরহানউদ্দিন এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের কাছ থেকে জামিন পেয়ে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে খান এবং অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান, ২০১৩ সালের বিক্ষোভের প্রতিবেদনে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত হন। এরপর ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃক কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খানকে আটক করা হয়। পরদিন তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন: