প্রকাশিত:
১৩ জুন ২০২৪, ১৫:৪২
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্ট থেকে গুলিবর্ষণের গত ১০ দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌযান চালাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপে এখন ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কট শুরু হয়েছে। মানুষের নিত্যপণ্য একদম নেই। এছাড়া তেলের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে।
ঈদের আগে মানুষজন অনেক কষ্টে পড়েছে। এ কারণে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে পণ্য ও সীমিত আকারে যাত্রী আসা-যাওয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) থেকে।
বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ কথা জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইয়ামিন হোসেন।
জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) থেকে বিকল্প পথ কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়ার জেটি ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পন্যবাহী ট্রলার যাবে সেন্টমার্টিনে। একই সাথে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর হয়ে নতুন চ্যানেলে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সীমিত আকারে যাত্রী আসা-যাওয়া শুরু হবে।
সবশেষ মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে বাংলাদেশী স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়েছে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ও শুক্রবার (৭ জুন) এই রুটে চলাচলকারী একাধিক ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নাকি বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপে যে চাল আছে তাতে বড়জোর দুই-এক দিন চলতে পারে।;
তিনি আরো বলেন, ‘সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আগেই শেষ হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে বহুগুণ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দ্বীপবাসীর খাদ্য সঙ্কট আরো ভয়াবহ পর্যাযে পৌঁছাবে।’
এছাড়া প্রশাসনের কাছে নাফ নদীর মোহনায় টহল বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন স্পিডবোট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে মানুষ ভয়ে আর এ রুটে যাচ্ছে না। তাছাড়া ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা বা রুটও নেই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌ-রুটে চারটি ট্রলার ও ছয়টি স্পিডবোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করার পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হতো। এখন মহাসঙ্কটে রয়েছে মানুষজন।
দ্বীপের বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমারের অজ্ঞাত একটি অস্ত্রধারী গোষ্ঠী। তারা কোনোভাবেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে ট্রলার বা স্পিডবোট চলাচল করতে দিচ্ছে না। ওই রুটে ট্রলার বা বোট দেখার সাথে সাথে গুলি বর্ষণ করছে তারা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আদনান চৌধুরী জানান, বিষয়টি সব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন: