প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪, ১৭:৩৯
রীতিমতো বোম ফাটালেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইন্দ্রানী হালদার। এই তারকা সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানান, হোটেল কক্ষে তাকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। এটি ঘটেছিল তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মুম্বাইয়ের একটি হোটেল কক্ষে। তিনি কলকাতায় তার চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন ১৯৯০ সালে। বহু দশর্কপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন, হয়েছেন প্রশংসিত। বর্তমানে তিনি ছোটপর্দার সিরিয়ালের নিয়মিত এবং পরিচিত মুখ। টিভি মিডিয়ায়ও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন এই গুণী অভিনেত্রী।
জানা যায়, অধিক খ্যাতির আশায় বাঙালি ললনা ইন্দ্রানীও একসময় গিয়েছিলেন বলিউডের হিন্দি চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার গড়তে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাস্টিং কাউচের শিকার হয়েছিলেন ছোটপর্দার এই ‘শ্রীময়ী’। একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে জীবনের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতাই শেয়ার করেন অভিনেত্রী।
বর্তমানে কাস্টিং কাউট, মি টু এই শব্দগুলোর সঙ্গে সবাই পরিচিত। ২০১৮ সাল থেকে সারা বিশ্ব জুড়ে শুরু হয় মিটু মুভমেন্ট। এরই অংশ হিসেবে ইন্দ্রানী জানান, প্রায় তিন দশক আগে এক প্রযোজকের কুনজর পড়েছিল তার ওপর। তখন তার বয়স ২০ বছর। ভাগ্যের জোরে সে যাত্রায় বেঁচে যান বলে জানান তিনি।
‘উন্মেষ’ নামে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ইন্দ্রানী বলেন, তখন আমার ২০ বছর। মুম্বাই গিয়েছিলাম একটা ছবি করতে। একদম জীবনের প্রথমদিকের ছবি। সেই সময় আমি এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই।
ইন্দ্রানী জানান, তাকে সকালের ফ্লাইটে মুম্বাইয়ে ডাকা হয়। কিন্তু বাবার টিকিট দেওয়া হয় বিকালের ফ্লাইটের। কোনো দামি হোটেলে না রেখে লিঙ্কিং রোডের এক সাধারণ মানের হোটেলের রুম দেওয়া হয়েছিল ইন্দ্রানীকে। তাই তো শুরুতেই খটকা লাগে তার। এরপর প্রযোজক আচমকা ফোন করে জানান, তিনি দেখা করতে আসবেন। তখন ঘাবড়ে গিয়েছিলেন অল্পবয়সি ইন্দ্রানী। রুমে এসে সেই প্রযোজক সুযোগ বুঝে কুপ্রস্তাব দেন অভিনেত্রীকে। রীতিমত শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ারও চেষ্টা করেন।
ওইদিনের ঘটনা সম্পর্কে ইন্দ্রানী বলেন, আমি বারবার বলেছিলাম, এটা করবেন না প্লিজ। আমি এভাবে কখনো কাজ পাইনি, পেতেও চাই না। প্রযোজক পাল্টা বলেন, তুম বাঙালি লাড়কি, তুমকো হাম বাড়া হিরোইন বানাগেয়া, বাড়া বাড়া হিরোইন হামারে কদমোমে রেহতা হ্যায়।অর্থাৎ, তুমি বাঙালি হিরোইন,তোমাকে আমি অনেক বড় অভিনেত্রী তৈরি করব বলিউডের, অনেক নামিদামি হিরোইনরা আমার পায়ের তলায় থাকে। ইন্দ্রানী তখন দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, হতে পারে বড় বড় হিরোইন আপনার পায়ের তলায়। কিন্তু আমি এভাবে কাজ করিনি, আমাকে কলকাতা থেকে ডেকে এনে কাজ দিয়েছেন। কোনো সমঝোতা বা কম্প্রোমাইজ আমি করবো না।
এরপর মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতে থাকেন ইন্দ্রানী। তিনি বলেন, সৃষ্টিকর্তা, আজ কি আমি ধর্ষণের শিকার হবো! প্রযোজক তখন নিজের জামাকাপড় খুলতে শুরু করেছেন, ওমনি তার ফোন বেজে উঠে। ফোনটি করেছিলেন প্রযোজকের স্ত্রী। ইশারায় ইন্দ্রানীকে চুপ থাকতে বলছিলেন প্রযোজক। এই ফাঁকে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেন ইন্দ্রানী। জোরে জোরে কাশতে শুরু করেন। কাশির আওয়াজ ফোনের ওপারে পৌঁছেছিল। স্ত্রীকে নিজের সঠিক অবস্থান জানাতে একপ্রকার বাধ্যই হন প্রযোজক। এরপর হোটেল রুম থেকে চলে যান প্রযোজক, শুধু বলে যান - তুমহারা কুছ নেহি হোগা, তুম বেকার হো একদম।
ইন্দ্রানী আরও বলেন, সেদিন উনি আমার কনফিডেন্সটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমি কোনোদিন কম্প্রোমাইজ করে হিরোইন হতে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি। এও বলেন, ওই প্রযোজকের নামটা নিলাম না। কারণ উনি আর বেঁচে নেই। তবে পরবর্তীতে যখনই ওনার মুখোমুখি হয়েছি, উনি কোনোদিন চোখ তুলে আমার দিকে তাকাতে পারেননি।
মন্তব্য করুন: