প্রকাশিত:
৪ জুন ২০২৪, ১৪:৫৯
সর্বজনীন পেনশনের আলোচিত ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিবৃতি, সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর এবার কর্মবিরতি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে কর্মসূচিতে অংশ নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এতে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রত্যয় স্কিম বাতিল না করা হলে টানা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, সরকারের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। সরকারের এ উদ্যোগ সর্বসাধারণের জন্য ভালো। তাদের আপত্তি হলো—‘প্রত্যয়’ নামে নতুন যে স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি নিয়েই তাদের যত অনুযোগ। নতুন এ স্কিমে অবসরের পর এককালীন অর্থ পাওয়া যাবে না। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বৈষম্যের শিকার হতে হবে। এজন্য তারা এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না। আগের নিয়মে পেনশন পেতে চান।
‘আমরা কেউই চাই না শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হোক। সরকার সাড়া না দেওয়ায় সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। শিগগির বিষয়টি সমাধান না করলে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’— বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি।
তবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘প্রত্যয়’ স্কিমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরের পর মাসিক ভাতা পাবেন। আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সংস্থার দেওয়া অর্থ কর্মচারীর ‘কন্ট্রিবিউশন’—এর চেয়ে কম হলেও প্রত্যয় স্কিমে প্রতিষ্ঠানকে কর্মীর সমপরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে। এমন শর্ত থাকায় পেনশনার আরও বেশি লাভবান হবেন।
প্রত্যয় স্কিমের বিরোধিতা কেন?
দেশে গত বছরের ১৭ আগস্ট প্রথমবারের মতো সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করে সরকার। শুরুর দিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সব পেশাজীবী সংগঠন এটিকে সাধুবাদ জানিয়েছিল। সেসময় এ নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী ঘরানার শিক্ষক নেতারাও। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতা, এমনকি উপাচার্যরাও এটিকে যুগান্তকারী উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন। উচ্ছ্বাস জানিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন কলামও।
চলতি বছরের মার্চে সর্বজনীন পেনশনে নতুন ‘প্রত্যয় স্কিম’ যুক্ত করে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপনে প্রত্যয় স্কিমের রূপরেখা ঘোষণা করা হয়। ২০ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন এ স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়। এরপর থেকেই মূলত আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন শিক্ষকরা। কোনোভাবেই শিক্ষকরা এ পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না। তাই পেনশন স্কিমের আওতার বাইরে থাকতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা।
প্রত্যয় স্কিম নিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী— আগামী ১ জুলাই বা তার পরে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে যারা যোগদান করবেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
শিক্ষক নেতারা জানান, বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার। কর্মকর্তা রয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি। কর্মচারীসহ সবমিলিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়াবে চার লাখ। অথচ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের ক্ষেত্রে আগের নিয়মেই পেনশন ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া। তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও রয়েছেন। অধ্যাপক নিজামুল হক বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমের যে রূপরেখায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন যোগদান করা শিক্ষকরা এককালীন আর্থিক সুবিধা পাবেন কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। পেনশন ও এককালীন সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত বলাও হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা সর্বজনীন পেনশন। তাহলে এটা তো সবার জন্যই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। সরকারি কর্মকর্তাদের বাইরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে বৈষম্য ও অসন্তোষ বাড়বে। অবসরকালীন নিশ্চয়তা একই রকম না থাকলে আগামীতে মেধাবীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসতে নিরুৎসাহিত হবেন। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।’
‘আগেও বলেছি, এখনো বলছি প্রত্যয় স্কিমের যে রূপরেখা, তা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। নতুন ধারণা হওয়ায় অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না। বিরোধিতা না করে ভালো করে এটি যাচাই করা উচিত।’— পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, প্রত্যয় স্কিম চরম বৈষম্যমূলক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন দিয়েছেন। নিজস্ব বেতন কাঠামো, নিজস্ব পেনশন সিস্টেম; সব ক্ষেত্রেই স্বায়ত্তশাসন দিয়েছেন। সুতরাং নতুন এ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় আমরা যুক্ত হতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের বেতন কম, তেমন সুযোগ-সুবিধাও নেই। সর্বশেষ যে পেনশন, সেটাও যদি অভিন্ন নীতিমালায় চলে যায়, সবার জন্য একই হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে মেধাবীরা কেন আসবে? স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষকবান্ধব নীতি প্রয়োজন। আশা করি, সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আগের নিয়মে পেনশন চালু রাখবে।
শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এর আগে দাবি জানিয়েছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল- সরকার বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমাধান করবে। সেটা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
‘বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। দু’পক্ষকেই সংকট সমাধানে আন্তরিক হতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ে যাবেন।’— ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
তিনি বলেন, শিক্ষক বলেন আর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন আমরা কেউই চাই না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হোক। সরকার সাড়া না দেওয়ায় সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। শিগগির বিষয়টি সমাধান না করলে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
যা বলছেন পেনশন কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানজমেন্ট ইনফরমেনশন সিস্টেম বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী। বর্তমানে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বরত। গত বছরের আগস্টে সর্বজনীন পেনশন চালু হওয়ার পরপরই একটি জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে কলাম লিখেছিলেন অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। সেখানে তিনি এটিকে ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ উল্লেখ করেছিলেন।
সেখানে তিনি সর্বজনীন পেনশনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করে লিখেছিলেন, ‘আমাদের দেশে এমন ব্যবস্থা কখনো প্রবর্তন হতে পারে তা আমি কখনো ভাবিনি। তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনা-সমালোচনার পরও এ স্কিমটিকে ঐতিহাসিক বা যুগান্তকারী ব্যবস্থা বলা যেতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা এখন এটির বিরোধিতা করছেন— বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করা হলে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, শিক্ষকরা আগে এককালীন পেনশন পেতেন, আবার নির্দিষ্ট পিরিয়ডের জন্যও গ্রহণ করা যেতো। এখন হয়তো নতুন পলিসিতে শিক্ষকদের নিজেদের কন্ট্রিবিউশন করতে হচ্ছে, এজন্যই বিরোধিতা করছেন। আমার ধারণা সেটাই মূলকারণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। দু’পক্ষকেই সংকট সমাধানে আন্তরিক হতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা সেশন জটে পড়ে যাবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, প্রজ্ঞাপনের পর থেকে শিক্ষকরা এটি নিয়ে অসন্তোষ জানাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (শিক্ষক সমিতি) কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ নিয়ে কোনো মতামত নেই। একজন শিক্ষক হিসেবে যদি মতামত দিই, তাহলে বলবো- বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান বলেন, আগেও বলেছি, এখনো বলছি প্রত্যয় স্কিমের যে রূপরেখা, তা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। নতুন ধারণা হওয়ায় অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না। বিরোধিতা না করে ভালো করে এটি যাচাই করা উচিত।
তিনি বলেন, প্রত্যয় স্কিমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ কন্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে যে টাকা মাসিক ভিত্তিতে জমা হবে, তার মূল টাকা ও মুনাফার ওপর অবসরে গেলে মাসে মাসে পেনশন দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শিক্ষকরা যদি আরও বিস্তারিত জানতে চান, আমরা জানাতে প্রস্তুত। তারা তো জানতেই আগ্রহী নয়।
‘প্রত্যয় স্কিম’ শুরু হবে যেভাবে
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা (দুটির মধ্যে যেটির পরিমাণ কম) কেটে নেওয়া হবে। সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে।
এরপর মোট অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর করপাস হিসাবে জমা করবে। এ প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তা–কর্মচারীর পেনশন ফান্ড গঠিত হবে। ফান্ডের অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবে। সেখান থেকে পাওয়া মুনাফা এবং চাঁদা হিসেবে জমা করা অর্থের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পেনশন দেওয়া হবে।
বর্তমানে দেশে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড বা সিপিএফ ব্যবস্থায় পেনশন দেওয়া হয়। যেখানে কর্মচারীর মূল বেতনের ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। যার সঙ্গে প্রতিষ্ঠান যুক্ত করে মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। প্রত্যয় স্কিমের সঙ্গে সিপিএফের পার্থক্য হলো প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ১০ শতাংশ দেবে, সিপিএফ থেকে যা ১ দশমিক ৬৭ বেশি।
টাকার অংক কেমন হবে?
যদি একজন ব্যক্তির বেতনের ১০ শতাংশের পরিমাণ হয় ২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রত্যয় স্কিমে যদি তিনি অংশ নেন, তাহলে প্রতি মাসে তার বেতন থেকে কাটা যাবে আড়াই হাজার টাকা, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানও দেবে একই পরিমাণ অর্থ। ৩০ বছর চাঁদা দিয়ে যাওয়ার পর যখন তিনি অবসরে যাবেন অর্থাৎ, ৬০ বছর বয়স থেকে তিনি মাসে ৬২ হাজার ৩৩০ টাকা হারে পেনশন পাবেন।
এছাড়া ৩০ বছরে তার বেতন থেকে দেওয়া চাঁদার পরিমাণ দাঁড়াবে ৯ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানও জমা করবে ৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে তার চাঁদার পরিমাণ হবে ১৮ লাখ টাকা। তিনি যদি ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন, তবে ৬০ বছর বয়স থেকে পরবর্তী ১৫ বছরে মোট পেনশন পাবেন ১ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা। যা তার নিজ জমার ১২ দশমিক ৪৭ গুণ।
যেহেতু পেনশনের সুবিধা আজীবন মিলবে, তাই এ অংক আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য মুনাফার হার বাড়লে মাসিক পেনশনের পরিমাণও বাড়বে।
মন্তব্য করুন: