প্রকাশিত:
১৯ মে ২০২৪, ১৭:০৪
ইরানের কারাগারগুলোয় নারী বন্দীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যৌন নিপীড়ন চালান—এমন অভিযোগ তুলেছিলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী খ্যাতিমান মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি। এ জন্য কারাবন্দী নার্গিস নতুন করে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন বলে গতকাল শনিবার (১৮ মে) জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
এই বিচার কার্যক্রম আজ রোববার (১৯ মে) শুরু হওয়ার কথা। এর আগে গত এপ্রিলে কারাগার থেকে একটি অডিও টেপ পাঠান নার্গিস। ওই টেপ তাঁর সমর্থকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নার্গিস ইরানে নারীদের ওপর ‘পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ পরিচালনার’ সমালোচনা করেন।
সর্বশেষ এই মামলায় ‘শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে নার্গিসের বিরুদ্ধে। তবে ইরানের বিচারিক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
নার্গিসকে উদ্ধৃত করে তাঁর পরিবার বলছে, বিচার কার্যক্রম প্রকাশ্যে হওয়া উচিত। এর ফলে সাক্ষী ও ভুক্তভোগীরা সবার সামনে নারীদের ওপর রাষ্ট্রকাঠামোর চালানো যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারবেন।
তেহরানের আলোচিত এভিন কারাগারে রাখা হয়েছে নোবেলজয়ী নার্গিসকে।
ইসলামিক পোশাক বিধি মেনে না চলার কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় নারীদের ওপর দমন জোরদার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিশেষত ভিডিও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
৫১ বছর বয়সী অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ইরানে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করায় তিনি সম্মানজনক এ পুরস্কার পান।
২০২১ সালের নভেম্বর থেকে নার্গিস কারাগারে আছেন। প্যারিসে বসবাস করা স্বামী–সন্তানদের সঙ্গে বহু বছর দেখা করার সুযোগ পাননি তিনি।
এমনকি কারাবন্দী থাকায় নার্গিস নিজে উপস্থিত হয়ে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। নরওয়ের রাজধানী অসলোর সিটি হলে নার্গিসের সন্তান তাঁর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
নার্গিসের পরিবারের সদস্যরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত নার্গিস ১২ বছর ৩ মাসের কারাভোগ করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর ওপর বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তবে কারাগারে বন্দী করলেও নার্গিসের কণ্ঠস্বর দমাতে পারেনি ইরান সরকার। পোশাক বিধি মেনে নারীদের স্কার্ফ পরাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে কারাগারে বসেই প্রতিবাদ ও আন্দোলন করছেন তিনি। এমনকি কারাগারের ভেতরে পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীদের সামনে স্কার্ফ পরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন: