প্রকাশিত:
১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৫:৪১
ইউক্রেনের সেনা কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় বিধ্বস্ত শহর আভদিভকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এতে শহরটি রাশিয়ার বাহিনীর দখলে চলে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো। ইউক্রেনীয় বাহিনী বলেছে, গোলাবারুদের তীব্র ঘাটতির কারণে তারা আর শহরটি ধরে রাখতে পারছিল না। ইউক্রেনীয় নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আভদিভকার প্রতিরক্ষা অবস্থান ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান।
তিনি এ সময় বলেন, ২০২৩ সালের মে মাসের পর থেকে আভদিভকা শহরে সবচেয়ে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে রাশিয়া। ওই বছর রুশ সেনারা পাশের বাখমুত শহর দখল করেছিল।
কয়েক মাসের যুদ্ধে আভদিভকা শহর প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। এটি পূর্ব ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ দোনেত্স্ক অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত।
ইউক্রেনকে প্রদেয় সামরিক সহায়তার প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে দীর্ঘ বিলম্বিত হওয়ায় ইউক্রেন বাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। তাই অনেক বেশি অস্ত্র-সরঞ্জাম মোতায়েন করা রুশ বাহিনী চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে পারে—এ আশঙ্কায় ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। বড় ধরনের অস্থিরতার মধ্যে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি।
তিনি জানান, যুদ্ধের আগে ৩২ হাজার মানুষের বসবাস ছিল আভদিভকা শহরে। এখন প্রায় জনশূন্য। এবার ইউক্রেনীয় বাহিনীও এই শহর ছেড়ে নিরাপদ অবস্থানে ফিরে গেছে।
সশস্ত্র বাহিনীর এক বিবৃতিতে জেনারেল ওলেক্সান্ডার বলেন, ‘আমি শহরটি থেকে আমাদের ইউনিটগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চারদিক থেকে ঘেরাও হওয়ার আগেই সেনাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় অগ্রবর্তী লাইন থেকে প্রতিরক্ষামূলক স্থানে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
’২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের দ্বিতীয় বছর পূর্ণ হবে। এ পটভূমিতে আভদিভকা থেকে ইউক্রেনের পিছু হটাকে রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরের মে মাস থেকে পাশের বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রেখেছে রুশ বাহিনী। এবার আভদিভকার নিয়ন্ত্রণও পেল তারা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার হাতে আভদিভকার পতন ঘটার বিষয়টি ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমা সামরিক সহায়তা কতটা জরুরি তারই জানান দিচ্ছে। গতকাল স্থানীয় সময় সকালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির। তিনি বিষয়টি উল্লেখ করে জরুরি সামরিক সহায়তার জন্য পশ্চিমাদের চাপ দিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছিল।
মন্তব্য করুন: