শনিবার, ৩১শে মে ২০২৫, ১৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • শুরু হচ্ছে নতুন স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ, কিভাবে পাবেন স্মার্ট কার্ড?
  • নোয়াখালীতে ঘরে ঢুকে নারীকে জবাই করে হত্যা, লাশ পুকুরে
  • ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে কানাডা, ম্যানিটোবায় জরুরি অবস্থা জারি
  • আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য হার্ভার্ডের বিকল্প গন্তব্য
  • ভারতের দাসত্ব করবে না বাংলাদেশ, প্রয়োজন হলে জীবন দেবো
  • জেনে নিন মাথায় নতুন চুল গজানোর দুর্দান্ত উপায়
  • ইশরাকের শপথ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন
  • দুর্ভোগ চরমে মাত্র তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছেন ২৬ হাজার গ্রাহক
  • নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সাগর, বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
  • এটিএম আজহারের খালাস উদযাপন করায় এনসিপিকে বর্জনের ঘোষণা

অর্থনীতি ঠিক রাখা নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১১:০৬

আওয়ামী লীগের নতুন সরকারকে এবার যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে, তার মধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জ দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং কভিড মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার ধাক্কার রেশ আরো বেশ কিছুদিন বইতে হবে বাংলাদেশকে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং সরকারের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য  এমনটি জানিয়েছেন।

সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ অর্থনীতি ঠিক রাখা

 

তাঁদের মতে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আরো সম্পর্ক উন্নয়ন করা, দেশের ভেতর বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর আন্দোলন কর্মসূচি মোকাবেলার চাপও রয়েছে সরকারের ওপরে।


তবে অর্থনীতির চাকা ঠিকঠাক ঘুরতে থাকলে অন্য চাপগুলো সরকার উতরে যেতে পারবে বলে তাঁরা মনে করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার(১২ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জ আসলে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক- সামনে এই তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের একটা বিশ্বাস আছে, আজকে যে এই সংকট অতিক্রম করে একটি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পেরেছি, এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিক লিডারশিপের জন্য সম্ভব হয়েছে। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে দক্ষতা, দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন এবং সংকটে রূপান্তরের রূপকের ভূমিকা পালন করেছেন, সে কারণেই মূলত আমরা সাহস রাখি, আশা রাখি।



আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি ও তাদের মিত্ররা বর্জন করলেও সরকার তা সামাল দিতে পেরেছিল। এর বড় কারণ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তখন বেশ ভালো অবস্থায় ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক পরাশক্তি নানা চাপ দিয়েও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারেনি। ওই সময় বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন জোরালো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেও সফল হননি।


দেশের অর্থনৈতিক শক্ত অবস্থানের কারণে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং কভিড মহামারির ফলে সারা বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশেও বেশ ভালোভাবেই পড়েছে। মুদ্রাস্ফীতি, ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলো বাড়ছে। দেশের রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার জন্য নতুন সরকারকে খুব সাবধানে, দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


জানতে চাইলে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত  বলেন, ‘গোটা বিশ্বব্যাপী এখন যে চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে, সেগুলো আমাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এগুলোর ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক যে সংকট তার সঙ্গে বাংলাদেশও সংযুক্ত। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ বাড়ানো এগুলো আমাদের দেখতে হবে।’

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক চাপ সামাল দেওয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই এবারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। এ কারণে বিগত সরকারের অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। গত মেয়াদে এই দুই মন্ত্রণালয় সরকারকে বেশ ভুগিয়েছে। ফলে দুই মন্ত্রণালয়েই এবার নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সামাল দিতে হবে বিদেশি চাপ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সরকারের একাধিক মন্ত্রী  জানিয়েছেন, নতুন সরকারকে দেশে-বিদেশে একাধিক চাপ সামাল দিতে হবে। বেশ কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের কয়েকটি মিত্র দেশের কিছু ইস্যুতে সম্পর্কের দোলাচল চলছে। ওই দেশগুলো সরকারের ওপর নানা ধরনের চাপ তৈরির চেষ্টা করে চলেছে। তারা ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার করার চেষ্টা করছে। বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে বিদেশি চাপ মোকাবেলার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজে অভিজ্ঞ এমন চারজনকে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে ড. হাছান মাহমুদকে। তিনি একসময়ে এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রী করা হয়েছে সাবের হোসেন চৌধুরীকে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। ১৬৩ দেশের পার্লামেন্টের জোট ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিএ) সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে এবারের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে করা হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। এই চার মন্ত্রীকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের পক্ষে নানা লবিং করতে কাজে লাগানো হবে।

অভ্যন্তরীণ একাধিক চ্যালেঞ্জ

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার মতে, নতুন সরকারকে দেশের অভ্যন্তরে একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর আন্দোলন কর্মসূচি মোকাবেলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আন্দোলন কর্মসূচি যদি সহিংসতার দিকে এগিয়ে যায়, তাহলে সরকারকে তা সামাল দিতে বেগ পেতে হতে পারে।

এবারের নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের মিত্র দলগুলোর সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব ও অনাস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ১৪ দলের দীর্ঘদিনের মিত্রদের অনেকেই এখন সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট। ফলে রাজনৈতিক মিত্রহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে ক্ষমতাসীন দলের। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ ক্ষোভ প্রশমনে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করতে একটি গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। তাদের মোকাবেলা করা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা আমাদের জন্য একটা বড় কাজ হবে।’


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর