প্রকাশিত:
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:০৬
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা তিন দিন ধরে সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার দাপট কাটলেও উত্তরের হিমেল বাতাসে অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তবে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে দেখা মিলেছে ঝলমলে রোদের।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত শনিবার সকালে হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৌষের প্রথম দিন থেকেই কুয়াশার দাপট কমে দিনভর রোদের দেখা মিললেও হিমেল বাতাস থাকায় দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে। তিন দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। একই সঙ্গে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠানামা করছে ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। সর্বশেষ (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার পাওয়ার টিলার চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, সকালে আর রাতে অতিরিক্ত ঠান্ডা। ঠান্ডায় হালচাষ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সকালে রোদ উঠলেও রোদের তাপ নেই। বাতাসে রোদের তাপ বোঝা যায় না।
সোমবার সকালে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে হালকা কুয়াশার মধ্যে গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছেন গন্তব্যে। শীতের কাপড় জড়িয়ে কৃষকেরা কাজ করছেন ফসলের মাঠে। সকাল আটটার দিকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিতে থাকে সূর্য। ধীরে ধীরে উঠতে থাকে ঝলমলে রোদ। তবে উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাস বইতে থাকায় দিনের বেলাও অনুভূত হচ্ছে শীত।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ মুঠোফোনে বলেন, টানা তিন দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। বর্তমানে এই এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে আকাশে কুয়াশা ও মেঘের পরিমাণ কমে যাওয়ায় উত্তরের হিমেল বাতাসে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এখন থেকে ধীরে ধীরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে।
সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার গোফাপাড়া এলাকায় শর্ষে খেতে পানি সেচ দিচ্ছিলেন সহিদ আলম (৫৮) নামের এক কৃষক। তিনি বললেন, ‘ঠান্ডায় হাত-পা জড়ো হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর আমাদের এদিকে যে বাতাসটা আসে, সেটা তো মনে হয় বরফমাখা। কিন্তু সকালে রোদ উঠায় কাজ করতে কিছুটা ভালো লাগছে।’
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ শুরু হয়েছে। সরকারিভাবে পাওয়া ২০ হাজার কম্বল জেলার পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
মন্তব্য করুন: