মঙ্গলবার, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ই পৌষ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল dailyvobnews@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • থার্টি ফার্স্টে আতশবাজি ফোটানো বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
  • প্রস্তুত হচ্ছে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল
  • খুলেছে সচিবালয়, ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়ের কাজ অন্য জায়গায়
  • সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক
  • সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
  • আন্দোলনে নামলেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা
  • বায়ুদূষণে আজ তৃতীয় ঢাকা, বেশি দূষণ যেসব এলাকায়
  • পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে
  • দেশকে কোনও দলের কাছে ইজারা দেয়া হয়নি
  • সাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু

ই-জিপিতে দুর্নীতি বেড়েছে: টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২০

ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্টের (ই-জিপি) মাধ্যমে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে দরপত্র ছিনতাই, জমাদানে বাধা দেওয়া এবং শক্তি প্রদর্শনের ঘটনা বন্ধ হয়েছে। তবে এর মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূলে যে প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি, বরং আরও বেড়েছে, এমনটি বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।


রোববার (২৫ সেটেপ্টম্বর) ধানমন্ডিতে টিআইবির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে ই-সরকারি ক্রয়: প্রতিযোগিতামূলক চর্চার প্রবণতা বিশ্লেষণ (২০১২-২০২৩)’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপনের আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন টিআইবির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট লোকজন ও ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে কাজগুলো দিয়ে থাকে। এতে দেখা যায়, একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক দরপত্র জমা পড়ে। অন্য প্রতিষ্ঠানের দরপত্র পড়ার সুযোগ থাকে না। এর ফলে সরকারের বিপুল পরিমান অর্থের অপচয় হয়। ই-জিপিতে নির্দিষ্ট ঠিকাদারদের বাইরের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার যে আশা করা হয়েছিল, তা হয়নি।

গবেষণায় বলা হয়-

প্রায় ১২ বছর হতে চললেও ই-টেন্ডারিং এর মাধ্যমে ২০ থেকে ৩৫ ভাগ সরকারি কেনাকাটা সম্পাদিত হয়। বড় চুক্তিমূল্যের দরপত্র এখনো এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসেনি।

ই-জিপি বা ই-ক্রয়ের মাধ্যমে যতো কেনাকাটা হয়, তার ৯৯ ভাগের বেশি কাজের চুক্তিমূল্য ২৫ কোটি টাকার নিচে। ই- ক্রয়কার্যে সবার শীর্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগ (মোট কার্যাদেশের ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং চুক্তিমূল্যের ৪০ শতাংশ)।

ই-কেনাকাটার ৯২ ভাগ এবং চুক্তি মূল্যেও ৯৭ ভাগই মূলত ১০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মাধ্যমে হয়ে থাকে, যেখানে স্থানীয় সরকার বিভাগ সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে।

শীর্ষ পাঁচ শতাংশ ঠিকাদারের কাজের হিস্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। গড়ে প্রায় ৩০ ভাগ কাজের নিয়ন্ত্রণই এসব ঠিকাদারের হাতে।

সরকারি ই-ক্রয়কার্যে গড়ে দরপত্র পড়ার পরিমাণ বাড়লেও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র জমা পড়ার গড় হার ৩ দশমিক ৫৪। সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র জমা পড়ার গড় সবচেয়ে বেশি ৪৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ শতাংশের মূল্যসীমা সীমিত দরপত্র পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে, যেখানে কাজ পেতে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয় না, যেটি বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ বিনষ্ট করছে।

ই-ক্রয় কার্যক্রমে ৪৬ ভাগ ক্ষেত্রে দরপত্র পড়ে চারটির কম। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ হার ৬৫ ভাগ, যা ক্রয় প্রক্রিয়ায় কম মাত্রার প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত করে।

প্রতি পাঁচটি দরপত্রের একটি একক দরপত্রের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এই হার ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চারটির একটিই একক দরপত্র। ই-ক্রয় কার্যের ৭০ শতাংশই পাচ্ছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা, বাকি ৩০ ভাগ পাচ্ছেন স্থানীয় নন এমন ঠিকাদাররা।

একক দরপত্রের মাধ্যমে দেওয়া কার্যাদেশের আর্থিক মূল্য ৬০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সম্পাদিত কাজ ও পণ্যের ক্রয়মূল্যের ১৫ শতাংশ।

৯২ টি ক্রয়কারি প্রতিষ্ঠানে একক দরপত্র পড়ার হার ৭৫ ভাগের বেশি, ৪১৬ ঠিকাদার ৭৫ শতাংশের বেশি কাজ পেয়েছে একক দরপত্র থেকে।

ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় প্রতি দুটি ক্রয়কার্যের একটি একক দরপত্রের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, এরপরই রয়েছে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, এক্ষেত্রে একক দরপত্রের ভিত্তিতে ৩০ ভাগ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি একক দরপত্র পড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে, এতে একক দরপত্র পড়ার
হার ৬২ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এরপরই অবস্থান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের, হার ৫৫ দশমিক ২১ শতাংশ। সোনাইমুড়ি, বরগুনা এবং দাগনভূঁইয়া পৌরসভায় একক দরপত্র পড়ার হার ৯০ থেকে ১০০ ভাগ।

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী একটি স্বচ্ছ ক্রয় কার্যক্রমের জন্য কমপক্ষে চারটি দরপত্র জমা পড়া উচিত। এক্ষেত্রে ই-ক্রয় কার্যক্রমে চারের নিচে দরপত্র পড়ে ৪৬ ভাগ ক্ষেত্রে। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধ্বতিতে এ হার ৬৫ ভাগ।

গবেষণার শেষ অংশে বেশ কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেছে টিআইবি।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর